নাম বিকৃতি ও ব্যঙ্গ করা নিয়ে যা বলে ইসলাম
নিউজ ডেস্ক

নাম বিকৃতি ও ব্যঙ্গ করা নিয়ে যা বলে ইসলাম
মানুষের প্রথম পরিচয় তার নাম। জন্মের পরই মা-বাবা একটি নাম দেন সন্তানের। সেই নামেই লোকজন তাকে চেনে-জানে। তাই ব্যক্তির নামের গুরুত্ব অনেক বেশি। একটি সুন্দর নাম একজন মানুষের জীবনের মর্যাদাপূর্ণ অংশ। কিন্তু বর্তমান সমাজে নাম নিয়ে ব্যঙ্গ ও ট্রল করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে ফেসবুকে এবং বন্ধুমহলে একে অন্যের নামকে বিকৃত করে ডাকার প্রবণতা দিন দিন মহামারির মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে। নাম বিকৃত করা কিংবা অপমানসূচক নামে ডাকা মারাত্মক গুনাহ এবং চরম অপরাধ।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা সবাইকে সতর্ক করে বলেন— ‘হে ঈমানদাররা! কোনো মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোনো মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে; কেননা যাদের উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অন্য নারীদের উপহাস না করে; কেননা যাদের উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিণীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ কোরো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তাওবা করে না তারাই তো জালিম।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১১)
মুসলিমের ইজ্জত রক্ষা আবশ্যক :
এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) অন্য মুসলিম ভাইয়ের মান-সম্মান, ইজ্জত-আব্রু ও ধন-সম্পদ রক্ষা করতে বলেছেন। সেগুলো নষ্ট করা কিংবা তাতে অবৈধ হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের জান, মাল ও ইজ্জত হারাম।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৪)
অন্য এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) মুমিনদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি এবং তার সঙ্গে লড়াই করা কুফুরি।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৪৪)
মুসলিমরা পরস্পর ভাই:
মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, ‘এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। সে তার ওপরে জুলুম করে না, তাকে সহযোগিতা করা পরিত্যাগ করে না এবং তাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করে না। কোনো ব্যক্তির জন্য তার কোনো মুসলিম ভাইকে হেয় ও ক্ষুদ্র জ্ঞান করার মতো অপকর্ম আর নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৬/২৯৭, ৭৭৫৬)
রাসুল (সা.) আরও বলেন, ঈমানদারদের সঙ্গে অন্য একজন ঈমানদারের সম্পর্ক ঠিক তেমন যেমন দেহের সঙ্গে মাথার সম্পর্ক। সে ঈমানদারদের প্রতিটি দুঃখ-কষ্ট ঠিক অনুভব করে যেমন মাথা দেহের প্রতিটি অংশের ব্যথা অনুভব করে। (মুসনাদে আহমাদ : ৫/৩৪০)
অন্য হাদিসে এসেছে, একজন মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই, সে তার ওপর অত্যাচার করতে পারে না আবার তাকে ধ্বংসের মুখেও ঠেলে দিতে পারে না। (বুখারি, হাদিস : ২৪৪২)
ফিরিশতারা দোয়া ও বদ-দোয়া করে যখন :
হাদিসে আরো এসেছে, কোনো মুসলিম যখন তার ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করে তখন ফিরিশতা বলে, আমিন (কবুল করো) আর তোমার জন্যও তদ্রূপ হোক। (মুসলিম, হাদিস : ২৭৩২)
কাজেই কারো নাম বিকৃত করে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা অথবা ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে এমন খেতাব বের করে ডাকা, যা সে অপছন্দ করে না; এসব কর্মকাণ্ড কিছুতেই ইসলাম সমর্থন করে না। উপরন্তু অন্যের মনঃকষ্টের কারণ হয়, এমন যেকোনো কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকার জোর তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে একে অন্যের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে ও সঠিক সম্বোধনে ডাকার মানসিকতা তৈরি করে দিন। আমিন।
- যে দোয়া পড়লে মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- যে দোয়া পড়বেন রোগীর সুস্থতার জন্য
- অহংকার পতনের মূল
- কুরআন-হাদিসের আলোকে জেনে নিন কুরবানির ইতিহাস
- যেসব ছোট আমলে বেশি নেকি
- সর্বোত্তম খাবার ও উপার্জন
- রাসুল (সা.)-এর কবর খনন করেন যিনি
- রাতের যে দোয়া আল্লাহ তায়ালা ফিরিয়ে দেন না
- নফল নামাজের প্রকার ও বিধি বিধান
- যাদের দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না