আল জাজিরার মিথ্যাচার: বেরিয়ে এলো সামি’র আসল পরিচয়

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ বুধবার

জুলকারনাইন সের খান

জুলকারনাইন সের খান

নাম তার জুলকারনাইন সের খান। সবাই ডাকে সামি নামে। এই সামি নামেই বন্ধুমহলে সে বেশি পরিচিত। সূত্র বলছে, মাদকাসক্তির অভিযোগে মিলিটারি একাডেমি থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন প্রাক্তন ক্যাডেট জুলকারনাইন সের খান। যার জীবনের পেছনের পাতা উল্টালে-ই বেরিয়ে আসবে একের পর এক কেলেঙ্কারি আর অসামাজিক কার্যকলাপের চিত্র। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মার বখে যাওয়া সন্তান এই জুলকারনাইন সের খান ওরফে সামি। বাবা-মার অবাধ্য এই সন্তান নিজের স্বার্থের জন্য বাবার গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধাবোধ করতো না বলে জানা যায়। বাবা-মার বখে যাওয়া সেই নষ্ট সামি গত দুই বছর ধরে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার পেইড এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে হাঙ্গেরিতে। এবার বাংলা নিউজ ব্যাংকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে আল জাজিরার মিথ্যাচারের এক প্রামাণ্য দলিল। বেরিয়ে এসেছে ভাইরাল হওয়া আল-জাজিরার সেই মিথ্যা ডকুমেন্টারির কথিত ব্যবসায়ী সামি’র আসল পরিচয়।

অনুসন্ধান বলছে, জুলকারনাইন সের খান ওরফে সামি আল জাজিরার ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে যা যা বলেছেন সব ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। কাতারভিত্তিক এই গণমাধ্যমটি একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছে বলেই সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে দেশবিরোধী কুচক্রী মহলের সাথে বড় অংকের অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে মিথ্যাচার প্রচারের চুক্তি করেছে বিতর্কিত টিভি চ্যানেল এই আল জাজিরা। মূলত বাংলাদেশি কিছু গাদ্দার পেইড এজেন্টদের মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আল জাজিরা ক্রয় করেছে। তাদেরই একজন জুলকারনাইন সের খান ওরফে সামি। যাকে দিয়ে এই প্রতিবেদনটিতে একের পর এক মিথ্যা বানোয়াট কল্পকাহিনী বলানো হয়। বাংলাদেশ সরকার ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে উদ্দেশ্য করে সামি একের পর এক মিথ্যাচার করে যান গোটা প্রতিবেদন জুড়ে। মিথ্যা বানোয়াট অসত্য কথা বলে দেশকে ছোট করেন গোটা পৃথিবীর সামনে।

এ প্রসঙ্গে নাম জুলকারনাইন সের খান ওরফে সামি’র সহপাঠি সাইফ এম ইশতিয়াক হোসাইন বলেন, আমি একটু অন্য প্রসঙ্গে কথা বলবো। আমি আল জাজিরার ভিডিওতে দেখানো হাঙ্গেরির ব্যবসায়ী সামি-কে নিয়ে কিছু কথা বলবো। সে আমার ছোটবেলার স্কুলের ক্লাসমেট। সামি এক্স ক্যাডেট। ক্লাস এইটে তাকে ক্যাডেট থেকে বের করে দেয়া হইছিল ডিসিপ্লিনের কারণে। পরে আমাদের সাথে কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়। তার বাবা ছিল আর্মির ডাক্তার এবং আমার বাবার কলিগ ও বন্ধু। সামির একজন ছোট ভাই ছিল, তার নাম মাহি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সামি ও তার ছোট ভাই তাদের মাকে হারায়। তার দুই বছর পরই তাদের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে। তখন থেকেই সৎ মায়ের সংসারে সামি বখে যেতে শুরু করে। ১৫-১৬ বছর বয়স থেকেই ড্রাগ নেয়া থেকে শুরু করে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ এমন কোনো কাজ নেই যা সে করতো না। তার নামে স্কুলে অনেক ডিসিপ্লিনারি অভিযোগ ছিল। তার মতো মাদকাসক্ত ছেলে টাকার জন্য সব করতে পারে।

সামি’র সহপাঠি ইশতিয়াক হোসাইন বলেন, সামি’র বাবা ঢাকায় পোস্টিং হবার পর সে ঢাকায় থাকতে তার বাবার সেনা ইউনিফর্ম পরে নিজেকে সেনা অফিসার পরিচয় দিয়ে একটি মেয়েকে পটায় এবং পরে পালিয়ে বিয়েও করে। পরে জানাজানি হলে তাকে তার বাবা বাসা থেকে বের করে দেয়। ইতিমধ্যে আমার সাথে তার এরপর আর কোনো রকম যোগাযোগ হয় না। তার কয়েক বছর পরে তারা বাবাও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সামি এসএসসি পাশ করলেও ইন্টার পাস করতে পারে নাই শুনেছিলাম। পরে কমন বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম যে ১ম বউকে ডিভোর্স দিয়ে (ডিভোর্স দিয়েছিল কিনা সিওর না) সে সেনাবাহিনীর আরো একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মেয়েকে পটায় এবং শ্বশুরের সহায়তায় হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করে। (এইটা সে কিভাবে করে সে ব্যাপারে তদন্ত করা যেতে পারে)

ইশতিয়াক হোসাইন বলেন, এত ডিস্টার্বড ব্যাকগ্রাউন্ডের একটি এডিক্টেড ছেলে টাকার জন্য অনেক কিছুই করতে পারে। এবং তখন থেকেই টাকার জন্য সে চুরি করা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করতো। তার মত ছেলের রেফারেন্স দিয়ে আলজাজিরা একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও আর্মি চিফকে দুর্নীতিবাজ ও মাফিয়া বানায় দিল, সেটা দেখে ছাগুরা লাফাইতে পারে, তবে আমি পারলাম না। ইন্টার ফেল সামিও কিভাবে হাঙ্গেরিতে ব্যবসা শুরু করলো সেটা ধরে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা টান দিলেই আরো তথ্য বেরিয়ে আসবে।

এদিকে আল জাজিরার ভিডিও প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, যদি সেনাপ্রধানের ভাইয়েরা মাফিয়াও হয়ে থাকে তবুও তাদের বিদেশে পালিয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতে হয়। তার মানে তারা দেশে আসলেই সরকার, আইন ও বিচারবিভাগ তাদের ঘাড় মটকে দিতো। আল জাজিরার ভিডিও প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন কতটা শক্তিশালী যে মাফিয়ারাও দৌঁড়ের উপরে থাকে!! তারা নিরাপদে দেশে থাকতে পারে না, মাফিয়াগিরি করতে পারে না।