খুলনায় বিনা খরচেই রোগীর ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ০৩:২৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২১ শনিবার

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

দেশে করোনার সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলছে। আর এ সঙ্কটকালে রোগীদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেনের। কিন্তু এ অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনার সামর্থ্য নেই রোগী ও পরিবারের। সরকারি হাসপাতালে নেয়ার মতো অবস্থাও নেই বর্তমানে।

এ অবস্থায় পরিবার যখন অসহায়, তখন একটি টেলিফোনে বেঁচে যেতে পারে করোনায় আক্রান্ত রোগীর জীবন। টেলিফোনে ঠিকানা জানানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিনা খরচেই রোগীর ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন।

আর মানবিকতার এ দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন খুলনার কয়েকজন যুবক। করোনায় আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের জন্য চালু করেছেন অক্সিজেন ব্যাংক নামের একটি মানবিক প্রতিষ্ঠান।

মোবাইলে ফোনে আক্রান্ত রোগীর অবস্থা ও অবস্থান জানার পর অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যাত্রা শুরু করেন অক্সিজেন ব্যাংকের সদস্যরা। লকডাউনের সময় শহরে সঙ্কটাপন্ন রোগীকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তারা।

অক্সিজেন ব্যাংক খুলনার সভাপতি সালাউদ্দিন সবুজ বলেন, আমাদের শুরুটা করোনার প্রথম ঢেউয়ের মাঝামাঝি সময়ে। চারিদিকে করোনায় আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। জীবন বাঁচানোর অক্সিজেন যেন এখন সোনার হরিণ। মূল্য এর আকাশচুম্বী।

তিনি আরো বলেন, সরকারি হাসপাতাল যেসময় মেটাতে পারছে না অক্সিজেনের চাহিদা। ঠিক তখনই আত্মপ্রকাশ আমাদের অক্সিজেন ব্যাংকের। অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরি। এরপর কিছু হ্নদয়বান মানুষ এগিয়ে আসেন। আমাদের শুরুটা হয় পাঁচটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে। এখন সে সংখ্যা ৫০ এর কাছাকাছি।

অক্সিজেন ব্যাংক খুলনার সদস্য তুহিন হোসেন ও কমলেশ চন্দ্র বাসার বলেন, একটি সিলিন্ডারে অক্সিজেন গ্যাস থাকে দুই হাজার লিটার। রোগীর অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন হলে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারে প্রয়োজন মেটানো যায় না। তখন আরো প্রয়োজন হলে তাও দেয়া হয় অক্সিজেন ব্যাংক থেকে।

সালাউদ্দিন সবুজ বলেন, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে প্রতিষ্ঠানের হটলাইন (আসাদ-০১৯৬৯৭৯৩৮৭৬, সৌরভ-০১৯১৭১৪৮৪৭৬)। ধনী, দরিদ্র, ধম, বণ নির্বিশেষে সকলের প্রয়োজন মেটাতে স্বল্প পরিসরে সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

অক্সিজেন ব্যাংক খুলনা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৌরভ গাইন বলেন, ‘জয় করবো মানবতা’- এ স্লোগানকে বুকে ধারণ করছে এ যুবকরা। আমরা স্বপ্ন দেখি কোনো রোগী আর অক্সিজেনের অভাবে মারা যাবেন না।

অক্সিজেনের গ্যাস শেষ হলে তা পুনরায় রিফিল করা ও সময়মতো রোগীর কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়া সব কাজই হয় স্বেচ্ছাশ্রমে। বিভিন্নভাবে এখানে ৩০ কর্মী কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।