আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্য ৫ দিনের রিমান্ডে

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১১:৫৮ এএম, ২৮ জুন ২০২১ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেফতার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন, সাইয়েদ তাইমিয়া ইবরাহীম ওরফে আনোয়ার, মারুফ চৌধুরী মিশু ওরফে ফারহান ও ফয়জুল মোরসালিন। গ্রেফতারকৃত সবাই আনসার আল ইসলামের একটি মডিউল বা সেলের সদস্য।

রোববার রামপুরা থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট আসামিদের আদালতে হাজির করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল (সিটিটিসি) বিভাগের প্রধান ও ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আনসার আল ইসলাম সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করার লক্ষ্যে একই মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন প্লাটফর্মে প্রচারণা চালিয়ে সংগঠনের জন্য নতুন সদস্য ও অর্থ সংগ্রহ করে আসছিল। এছাড়াও তাদের সংগঠনের সদস্যরা জনকল্যাণমূলক কাজ বা চ্যারিটির নামে দেশ ও বিদেশ থেকে সাদকাহ ও যাকাত সংগ্রহ করার আড়ালে জঙ্গি অর্থায়ন করে আসছিল বলে জানা গেছে।

বর্তমানে তারা ৩/৫ জনের গোপন সেল বা মডিউলের মাধ্যমে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই গোপন সেল বা মডিউলের সদস্যরা কাট আউট পদ্ধতিতে রিক্রুট হয়। ফলে ভিন্ন ভিন্ন সেল বা মডিউলের সদস্যরা কেউ কাউকে চিনতে বা জানতে পারে না। গ্রেফতাররা বিভিন্ন ধরনের এনক্রিপ্টেড অ্যাপসের মাধ্যমে নিজেরা যোগাযোগ করত।

গ্রেফতারদের মধ্যে সাইয়েদ তাইমিয়া ইবরাহীম আনোয়ার ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে। সে ২০১৫ সালে আনসার আল ইসলামে যোগ দেয়। ২০১৬ সালে সে একটি মডিউল বা সেলের দায়িত্ব পায়।

গ্রেফতার মারুফ চৌধুরী মিশু ওরফে ফারহান ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে বিবিএ করে 
‌'অন্যরকম' গ্রুপে চাকরি করত। সে ২০১৫ সালে আনসার আল ইসলামে যোগ দেয়। গ্রেফতার ইব্রাহীমের সেল গ্রুপের সে একজন সদস্য ছিল।

মারুফ চৌধুরী ২০১৭ সালে সংগঠনের নির্দেশে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যের আড়ালে উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের উদ্দেশ্যে তিন মাস মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থান করে।

গ্রেফতার ফয়জুল মোরসালিন ঢাকা আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাস করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে গ্র্যাজুয়েশন করে। সে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনলাইনে কাজ করত। সে ২০১৬ সালে আনসার আল ইসলামে যোগ দেয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক কী পরিমাণ টাকা তারা ব্যয় করে উগ্রবাদ প্রচারের চেষ্টা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রেফতার মারুফ চৌধুরী মিশু ওরফে ফারহানের কক্সবাজার-টেকনাফ কেন্দ্রিক কার কার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব। আমরা প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় কীভাবে দাওয়াতি কাজ ও মানবিক সাহায্য দিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে।

ধর্মীয় মতাদর্শী ও ধর্মীয় বক্তারা সম্প্রতি নিখোঁজ হচ্ছেন যদিও অনেকে ফিরে আসছেন এটা রাষ্ট্রীয় ট্রেকডাউন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একজন মিসিং হয়ে আবার ফিরে এসে জানিয়েছেন তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জে সালাফি মতাদর্শের এক নেতা দুই সহকর্মীসহ নিখোঁজ রয়েছেন সে ব্যাপারে জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি কার্যক্রম অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নজরদারি বা মনিটরিংটা সঠিক ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৭ সালের দিকে মানবিক অনুদান প্রদান ও সাহায্য দেওয়ার নামে আনসার আল ইসলাম রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রবেশ করেছিল। সে সুযোগে তারা দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বলে আমরা জেনেছি।