দ্বন্দ্বে জড়ালো জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১২:১৩ পিএম, ২৮ জুন ২০২১ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বিএনপির দুর্নীতিগ্রস্থ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ হবার পর থেকেই বিএনপিতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এরমধ্যে যুক্ত হয় তারেক রহমানের ছোট ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথির নেতৃত্বে আসার লিপ্সা। যার রেশ তীব্রভাবে পড়তে শুরু করেছে জিয়া পরিবারে। সূত্র বলছে, ক্ষমতার লোভে ইতোমধ্যেই জিয়া পরিবারে ফাটল দেখা দিয়েছে। আর নতুন করে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে মাঠে নেমেছেন জিয়া পরিবারের দুই পুত্রবধূ।

বিএনপি সূত্র বলছে, খালেদা জিয়াসহ তার অনুসারীদের মাইনাস করে বিএনপির চূড়ান্ত নেতৃত্ব গ্রহণ করতে ফখরুলকে হাতে রেখে নিজ ছকেই হাঁটছেন তারেক রহমান। আর তার এই স্বার্থবাদী চরিত্রকে গ্রহণ করছে না স্থায়ী কমিটিসহ স্বয়ং জিয়া পরিবার। এরইমধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথিকে নিয়ে দলের সক্রিয় একটি অংশ মাঠে নেমেছে। জানা গেছে, এ অংশটি তারেক রহমানকে মাইনাস করে সিঁথিকে নেতৃত্বে আনার ‘স্বপ্ন’ দেখছে। অন্যদিকে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও আলাদাভাবে সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করেছেন দলে। যার ফলে বিএনপিতে ত্রিমুখী নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বিএনপির একটি অংশের ভাষ্য, বিগত তিন মাস দুই সন্তানসহ দেশে ছিলেন শর্মিলা। দেশে থাকাকালীন সময়ে মোট পাঁচবার খালেদা জিয়ার সাথে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন তিনি। ৩০ মাস দেশে অবস্থানের পর ২৫ জুন লন্ডন ফিরে গিয়ে তারেক রহমানকে খালেদা জিয়ার বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। মুক্তির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন। যার ফলে শর্মিলার প্রতি দলের একটি অংশের আলাদা সহানুভূতি সৃষ্টি হয়েছে।

সেই অংশের নেতাদের মতে, তারেক রহমান তার মায়ের জন্য কিছুই করেননি। খালেদা জিয়ার নির্দেশনা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তারেকের উল্টোপথে হাঁটাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন শর্মিলা সমর্থকরা।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, খালেদা জিয়া যদি কোনো সমঝোতায় মুক্তি পান তা হলে শর্ত হিসেবে রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হওয়ার শর্ত থাকবে। তখন তারেক রহমানকে নেতৃত্বে আনার বড় একটি দাবি উঠবে। সেই আলোকে তারেক রহমান এখন থেকে তার কর্মপরিচালনা করছেন। যদি কোনো কারণে তিনি সিনিয়র নেতাদের বাধার সম্মুখীন হন, তখন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের নাম প্রস্তাব করা হবে চেয়ারপারসন করার জন্য।

সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের মেয়ে হিসেবে জোবাইদা রহমানের বাড়তি জনপ্রিয়তাও রয়েছে দলে এমনটাও মনে করেন এই নেতা। যদিও ভিসা ও পাসপোর্ট জটিলতায় ডা. জোবাইদা রহমানের বাংলাদেশে আসা নিয়ে এখনো জটিলতা কাটেনি।

তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বয়ং নেতৃত্ব নিয়ে জিয়া পরিবারেই বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে বলে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কেননা, ইতোমধ্যে তারেক রহমান স্থায়ী কমিটিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন না, খালেদা জিয়ার বার্তাও তিনি গ্রহণ করে কার্যত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও তারেকের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে নেতৃত্বে আনতে বড় আকারে নতুন সংকটে পড়তে যাচ্ছে দলটি- এমন মত দলের ভেতরে ও বাইরে।