অসহায় রজনীকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের ঘর উপহার

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১০:৩৯ এএম, ২৯ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অতিশীপর রজনী কান্ত বর্মন (৭৫)। সংসারে নানা শূন্যতার ভীরে অভাব হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে আসছিলেন যুগ যুগ ধরে।একটা সময় এসে ক্ষুধার যন্ত্রনার চেয়ে তীব্রতর হয়ে উঠছিল আশ্রয়ের অভাব। অর্ধশত বছর আগে তোলা ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে গিয়েছিল প্রায় যুগ আগে। এর পর ঘরের ছাউনিও ঝড়ে উড়ে যায়। গাছপালার পাতা দিয়ে কোন মতে একটি ঝরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছিলেন সন্তান নাতি নিয়ে ১০ সদস্যের পরিবার। তবে প্রতি বর্ষায় এই ঘরের কারনে যন্ত্রনার কান্না ছিল নিত্যদিনের সাথী। চলতি বর্ষায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তাই কান্না বাড়ছিল এই বৃদ্ধের। তবে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তার সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন কেন্দ্রিয় কৃষকলীগের নারী বিষয়ক সম্পাদিকা নারী সাংসদ অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি। নিজ অর্থে এই বৃদ্ধকে তৈরী করে দিয়েছেন একটি টিনের ঘর। আর এতেই আনন্দের কান্না ঝড়ছে রজনীর দু’চোখ দিয়ে।

রজনী চন্দ্র বর্মন গাজীপুরের শ্রীপুরের গোসিঙ্গা চাউবন এলাকার মৃত রাজেন্দ্র চন্দ্র বর্মনের ছেলে। একটা সময় ছিল তার পূর্ব পুরুষের মালিকানায় ছিল শত শত একর জমি। যদিও সে পৃথিবীতে আসার পূর্বেই ভাগ্য সহায় না থাকায় জমি হাতছাড়া হয়ে যায়। তার ঠাঁই হয় সরকারী বন বিভাগের মালিকানার জমির উপর ছোট একটি খুপরী ঘরে। অভাবের সাথে আজন্ম যুদ্ধ করে জীবন অতিবাহিত করা রজনী অন্যের বাড়ীতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। দুই মেয়ের জন্ম হওয়ার পর স্ত্রী মারা যান। নিজে অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে বড় করে বিবাহ দেন। সন্তানাদি হওয়ার পর বাবার কাছে রেখে মেয়ের জামাইরা চলে যান। বৃদ্ধ রজনীর ঘাড়ে পরে ১০জনের সংসারের বুঝা।

রজনীর ভাষ্য মতে, দুই মেয়েকে ছেড়ে তাদের জামাই চলে গেছেন কয়েকবছর হলো। দুই মেয়ের সন্তান নিয়ে এখন তাকে ১০জনের সংসারের ঘানি টানতে হচ্ছে। বৃদ্ধ হয়েছেন কাজ করতে পারেন না। এক বেলা খেলে আর এক বেলা খেতে পারেন না। এর উপর বসবাসের ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় বর্ষায় দিন ও রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে হতো। শুধু ঘরের কারনে কত রাত শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। মধ্যরাতে পরিবারের ছোট সদস্যদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠতো। তবে এবার ঘর পাওয়ায় হয়তো শান্তিতে রাতের ঘুম ঘুমাতে পারবেন।

গোসিংগা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংস্কৃতিক সস্পাদক সোহেল রানা বলেন, আমাদের এলাকায় এমন একটি অবহেলিত পরিবারের কথা আমরা স্থানীয় নারী সাংসদ রুমানা আলী টুসিকে অবহিত করার পর তিনি অসহায় এই পরিবারের জন্য ঘর করার উদ্যোগ নেন। নিজ অর্থে তিনি তাকে ঘর উপহার দিয়েছেন।

কেন্দ্রিয় কৃষকলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও স্থানীয় নারী সাংসদ রুমানা আলী টুসি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি এলাকার অসহায় মানুষের খবর নিয়ে তাদের কষ্ট লাগবের চেষ্টা করে আসছেন। এ বৃদ্ধের খবর পেয়ে তিনি তার নিজ তহবিল থেকে একটি ঘর নির্মান করে দিয়েছেন। তার এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।