ইসলামে শরিকে কোরবানি করার বিধান

ধর্ম ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ১৭ জুলাই ২০২১ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির আভিধানিক অর্থ হলো কাছে যাওয়া বা নৈকট্য অর্জন করা। ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় কোরবানি হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরিয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা।

একটি কোরবানি হলো একটি ছাগল, একটি ভেড়া বা একটি দুম্বা অথবা গরু, মহিষ ও উটের সাত ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ একটি গরু, মহিষ বা উট সাতজন শরিক হয়ে বা সাত নামে অর্থাৎ সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়।

কেউ চাইলে হযরত মুহাম্মদ (স.) পক্ষ হয়ে কোরবানি করতে পারবেন। এছাড়া মৃত আত্মীয়-স্বজন, জীবিত আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকেও কোরবানি করা জায়েজ আছে।

যদি কেউ মৃত ব্যক্তির সওয়াব পৌঁছানোর উদ্দেশে কোরবানি করে, তবে তা জায়েজ আছে। ওই গোশত নিজেও খেতে পারবে এবং যা কে ইচ্ছা দিতেও পারবে।

সাধারণ নিয়মে যদি গরু, মহিষ অথবা উট হয়, সে ক্ষেত্রে সাতজন শরিক হতে পারবে। কিন্তু তারা যদি একই পরিবারের হয়ে থাকে, তাহলে ওই পরিবারের সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে। পরিবারে যতজনই থাকুক না কেন, ১০ জন, ২০ জন, সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে।

এখানে একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। অন্য পরিবার থেকে ১০ জন হবে না। একটি পরিবার থেকে সাতের অধিকও অংশগ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু একের অধিক পরিবার হতে গেলে সাতের অধিক অংশগ্রহণ করতে পারবে না। 

যদি গরু কেনার আগে সাতজন অংশীদার হয়ে সবাই মিলে কেনে, তবে তা উত্তম। আর যদি কেউ একা একটি গরু কোরবানির জন্য কেনে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে যে, পরে আরো লোক শরিক করে তাদের সঙ্গে মিলে কোরবানি করবে, তবে সেটাও জায়েজ আছে। কিন্তু যদি গরু কেনার সময় অন্যকে অংশীদার করার ইচ্ছা না থাকে, বরং একাই কোরবানির নিয়ত করে থাকে, কিন্তু পরে অন্য কো‌নো গরীব ব্য‌ক্তিকে অংশীদার করতে চায়, তাহলে পারবে না‌। আর যদি ওই ক্রেতা সম্পদশালী হয় এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে, তবে ইচ্ছা করলে পরে অন্য অংশীদার নিতে পারবে।  

শরিক নির্বাচন

শরিক নির্বাচনে সতর্ক থাকা খুবই জরু‌রি। আল্লাহর কাছে কোরবানি কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন দ্বারা কোরবানি করা। হাদিসে আছে, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র আর তিনি শুধু পবিত্র বস্তুই গ্রহণ করে থাকেন। (সহীহ মুসলিম: ১০১৫)

তেমনি কোরবানি হতে হবে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও সন্তুষ্টির জন্য। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, সকল আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। (সহীহ বুখারী: ১)

যেহেতু সব শরিকের পক্ষ থেকে একটি পশু জবাই করা হচ্ছে তাই সবার নিয়ত ও উপার্জন শুদ্ধ হওয়া জরুরি। ফকিহদের মতে, কোনো শরিকের পুরা বা অধিকাংশ উপার্জন হারাম হলে কিংবা কেউ শুধু গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে শরিক হলে কারো কোরবানি সহীহ হবে না। (সূত্র: ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া ৩/৩৪৯, ৪০০; আলমগিরি ৫/৩৪২; আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫০৩)