কুবিতে পড়বে অদম্য শাহনাজ, সরকারি চাকরি করবে ফরহাদ

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১০:২৭ এএম, ১৪ আগস্ট ২০২২ রোববার

কুবিতে পড়বে অদম্য শাহনাজ, সরকারি চাকরি করবে ফরহাদ

কুবিতে পড়বে অদম্য শাহনাজ, সরকারি চাকরি করবে ফরহাদ

ছোটবেলা থেকে সমবয়সী বন্ধুদের মতো স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠেনি শাহনাজ আক্তার ও দীল মোহাম্মদ ফরহাদ। অদম্য আগ্রহ আর পরিবারের অনুপ্রেরণায় পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে এবার অংশ নিয়েছেন গুচ্ছ ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায়। 

শনিবার (১৩ আগস্ট) ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা দিতে ভর্তি হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে। দুজনেই শারীরিকভাবে বিশেষ শক্তির অধিকারী হলেও দুই জনের গল্প দুই ধরণের। 

পরীক্ষা শেষে কথা হয় অদম্য এই স্বপ্নবাজদের সঙ্গে। 

ছোটবেলা পড়ালেখার প্রতি প্রবল আগ্রহ থেকে দ্বিতীয়বার গুচ্ছতে অংশ নিয়েছেন শাহনাজ আক্তার। লেখাপড়া করে শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য কাজ করতে চান তিনি। কথা বলতে বলতে নিজের প্রশ্নটুকু দেখে নিচ্ছেন বারবার। 

শাহনাজ বলেন, আমি লেখাপড়া করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রথমবারের মতো পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হতে পারিনি। তাই প্রবল ইচ্ছা নিয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিতে আসলাম। আমি লেখাপড়া করে আমার মতো পিছিয়ে থাকা শারীরিকভাবে অপরিণতদের নিয়ে কাজ করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, কুমিল্লা বাড়ি হওয়া আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়তে চাই। এর আগেও এখানে পরীক্ষা দিয়েছি। 

শাহনাজের বড় ভাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ায় তিনি নিজেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। আমেনা গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৪ দশমিক ৪৪ এবং লালমাই সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৭৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় শাহনাজ। ছোটবেলা থেকেই শাহনাজ পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী। নিজের প্রবল ইচ্ছায় সে এতদূর আসতে পেরেছে বলে জানান তার সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যরা।

শাহনাজের চেয়ে গল্পটা ভিন্ন ফরহাদের। দুই পায়ে ভর করে বন্ধুর মোটরসাইকেলে চড়ে এসেছেন পরীক্ষা দিতে। ছোটবেলা থেকে শারীরিকভাবে ভিন্ন হওয়ায় বন্ধুদের কাছে ছিলেন অগ্রহণযোগ্য। বাবার মৃত্যুর পর ফরহাদের লেখাপড়া অনিশ্চয়তায় পড়ে যায়। মা আর মামার অনুপ্রেরণায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখছেন এবার। 

নিজে চলতে পারে দুই পায়ে। তাই বড় হয়ে সরকারি চাকরিই করবেন তিনি। তবে প্রথমে মানুষের মতো মানুষ হতে চান। 

ফরহাদ বলেন, একজন মানুষের মতো মানুষ হতে চাই। আমি অন্যান্যদের মতো তেমন চলাফেরা করতে পারি না। তাই আমি ভবিষ্যতে বসে থেকে সরকারি চাকরি করে পরিবারের হাল ধরতে চাই।