বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ০১:০০ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮০তম। গত বছরের তুলনায় চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। 

যুক্তরাজ্যভিত্তিক দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) ‘গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি তুলে ধরতে ২০১২ সাল থেকে এই সূচক প্রকাশ করে আসছে ইআইইউ।

এবারের সূচকে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১৩টি দেশের মধ্যে লাওস ও পাকিস্তানের ওপরে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৪তম। 

চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে ভারত ৬৮তম, মিয়ানমার ৭২তম এবং নেপাল ৭৪তম অবস্থানে রয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, চারটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে ১০০ পয়েন্ট প্রদানের মাধ্যমে সূচকটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলো হলো ক্রয়ক্ষমতা, সহজলভ্য বা প্রাপ্তি, গুণগত মান ও নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও সহনশীলতা। এসব সূচক মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫৪। সার্বিক সূচকে ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮০তম। এর মধ্যে খাদ্য ক্রয়ক্ষমতায় ৫২.১ পয়েন্ট পেয়ে অবস্থান ৮৭তম এবং খাদ্যপ্রাপ্তিতে ৬১.৫ পয়েন্ট পেয়ে ৪৬তম। খাদ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তায় ৫৮.৪ পয়েন্ট পেয়ে অবস্থান ৭১তম এবং টেকসই প্রাকৃতিক সম্পদ ও অভিযোজনে ৪৩.৯ পয়েন্ট পেয়ে অবস্থান ৯৩তম।

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, খাদ্য নিরাপত্তার শীর্ষ দেশের তালিকায় রয়েছে ফিনল্যান্ড। দেশটি ১০০ পয়েন্টের মধ্যে অর্জন করেছে ৮৩.৭। এর পরই আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডস। অন্যদিকে খাদ্য নিরাপত্তার তলানিতে সিরিয়া। ১০০ পয়েন্টের মধ্যে দেশটির অর্জন ৩৬.৩। এর পরই যথাক্রমে হাইতি, ইয়েমেন, সিয়েরা লিওন ও মাদাগাস্কার। তবে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে সার্বিকভাবে স্থবিরতা চলে এসেছে। গত ১১ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তার মান সর্বোচ্চ উন্নীত হয়েছিল ২০১৯ সালে। পরের বছর ২০২০ সালেও তা অব্যাহত ছিল। অন্যদিকে ২০২১ সলে তা ৬২.২ পয়েন্টে নেমে আসে, যা চলতি বছরও বিদ্যমান। যুদ্ধ পরিস্থিতিসহ সরবরাহ সংকটে বৈশ্বিক খাদ্যমানের উন্নতি হচ্ছে না বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ইকোনমিস্ট ইমপ্যাক্টসের প্রিন্সিপাল প্রতিমা সিং বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি খাদ্য বাণিজ্যের বড় বাধা হয়েছে। এ ছাড়া পরিবহন ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে খাদ্য সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে বৈশ্বিক খাদ্যের সহজলভ্য প্রাপ্তি কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হচ্ছে অনেক দেশকে। সার্বিকভাবে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার কারণে এশিয়া ও আফ্রিকার দরিদ্র ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা কিছুটা ঝুঁকিতে থাকবে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অবশ্যই সক্ষমতা অনুসারে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ সুদৃঢ় করতে হবে।

মানদণ্ডের বেশ কিছু উপসূচকে বাংলাদেশ বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি গবেষণা ও উৎপাদন এবং কৃষিপণ্যের বাণিজ্য। দেশের খাদ্য ও খাদ্যপণ্যের মান নিয়ে যথেষ্ট উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে।