প্রধানমন্ত্রীর জনসভার উদ্দেশে সাগর পাড়ি দিয়ে এলেন নেতাকর্মীরা

নিউজ ডেস্ক

সময় একাত্তর

প্রকাশিত : ১১:০৬ এএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২২ রোববার

প্রধানমন্ত্রীর জনসভার উদ্দেশে সাগর পাড়ি দিয়ে এলেন নেতাকর্মীরা

প্রধানমন্ত্রীর জনসভার উদ্দেশে সাগর পাড়ি দিয়ে এলেন নেতাকর্মীরা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে একদিন আগেই চট্টগ্রামে এসেছেন নদী বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের ১০ হাজার নেতাকর্মী।

গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় নেতাকর্মীদের নৌবহরটি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে এসে ৫টায় সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে পৌঁছে।

জনসভাকে ঘিরে আগেই চট্টগ্রামে চলে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকে আবাসিক হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থান করছেন। অনেকে নিজ আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের বাসায় উঠেছেন।

সমাবেশের উদ্দেশে আগত নেতাকর্মীরা জানান, তারা দুপুর থেকে সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০টি ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি ও মোটরসাইকেলযোগে গুপ্তছড়া ঘাটে আসতে শুরু করেন। বিকাল ৪টায় ২৫টি বোট ও স্পিডবোটে নেতাকর্মীরা একসাথে সন্দ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দেন।

সম্মেলনে আগত সন্দ্বীপ উপজেলা কৃষক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামসুল আলম বলেন, সারাজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এসেছি। অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আওয়ামী লীগের কথা শুনলে ঘরে বসে থাকতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে আসছেন শুনে মিজানুর রহমানের সাথে সমাবেশে যাচ্ছি।

যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান জানান, প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রামের জনসভায় যোগ দিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নদী পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম এসেছি প্রিয় নেত্রীর দলীয় নির্দেশনামূলক বক্তব্য শুনতে। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকায় সেগুলো বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।

দেখা গেছে, পৌনে ৫ লাখ বর্গফুটের পলোগ্রাউন্ড ময়দানের শেষপ্রান্তে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের এই মঞ্চে ২০০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূল মঞ্চ থেকে ৩০ মিটার সংরক্ষিত রেখে পশ্চিমে গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের বসার জন্য আলাদা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পূর্বদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এবং মাঝখানে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

ঢাকার কলরেডি থেকে আনা হয়েছে ৩০০ মাইক। জনসভাস্থল ছাড়াও নিউমার্কেট, সিআরবি, লালখানবাজার মোড়, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ হয়ে কদমতলী পর্যন্ত লাগানো হচ্ছে মাইক। জনসভাস্থলের বাইরে সড়কে লাগানো হচ্ছে বড় পর্দা, যারা ভেতরে ঢুকতে পারবেন না তারা এই পর্দায় দেখবেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য।

গতকাল শনিবার থেকে পলোগ্রাউন্ড ময়দানের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে পুরো জনসভাস্থল এবং এর আশপাশের এলাকা। দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পদবিধারী নেতার বাইরে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না সেখানে, ঢুকতে পারেননি গণমাধ্যম কর্মীরাও।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় জানিয়েছেন, সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের মোতায়েন শেষ হয়েছে। এছাড়া এসএসএফ, পিজিএফ, সাদা পোশাকের পুলিশ, ইউনিফর্মের পুলিশ, গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা মিলে পুরো জনসভাস্থল ঘিরে রেখেছে। সেখানে যারা ঢুকবেন তাদের অবশ্যই আর্চওয়ে পার হতে হবে। এরপর তল্লাশি শেষে সবাইকে ঢুকতে দেয়া হবে।

নগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ অতিথি, যারা মঞ্চে উঠবেন, তাদের জনসভাস্থলে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য মঞ্চের পেছনে আলাদা গেট করা হয়েছে। মঞ্চের পূর্বদিকে নারীদের জন্য আলাদা গেট আছে। আর মিছিল নিয়ে যারা আসবেন তাদের মূল গেট দিয়ে ঢুকতে হবে।

প্রসঙ্গত, ১০ বছর ৯ মাস পর নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিশাল জনসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। অবশ্য বছর চারেক আগে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ তিনি পটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।