ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জান্নাতের নদী ও ঝরনাগুলো যেমন হবে

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২৫ জুলাই ২০২২  

জান্নাতের নদী ও ঝরনাগুলো যেমন হবে

জান্নাতের নদী ও ঝরনাগুলো যেমন হবে

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে রাসুল! যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, আপনি তাদের এমন জান্নাতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নির্ঝর ধারা প্রবহমান থাকবে।’ (সুরা বাকারা : ২৫)

জান্নাতে মোট চার ধরনের নদী প্রবাহিত হবে। যেসব সৌভাগ্যবান মানুষ জান্নাতে যাবেন আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য জান্নাতে বিচিত্র প্রকার হ্রদ, নদী, ফোয়ারা, প্রস্রবণ ও নির্ঝর ধারা প্রস্তুত করে রেখেছেন। দুনিয়ার কোনো নদী ও ঝরনার সঙ্গে এগুলোর তুলনা হয় না। আকার, আয়তন, স্বাদ, গন্ধ ও বর্ণ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।

আর জান্নাতে বড় বড় চারটি সমুদ্র থাকবে। একটি পানির, দ্বিতীয়টি মধুর, তৃতীয়টি দুধের আর চতুর্থটি শরাবের। এখান থেকে আরও অসংখ্য ছোট ছোট নদী প্রবাহিত থাকবে। জান্নাতের প্রতিটি প্রাসাদের সঙ্গে এ চার নদীর সংযোগ থাকবে। জান্নাতের সমুদ্রগুলো কস্তুরির পাহাড় ও আদন থেকে উৎসারিত হয়ে গর্তের মতো বিশাল বিস্তৃত নিচু স্থানে জমা হয়। ওখান থেকে সমুদ্র ও নদীর আকারে প্রবাহিত হতে থাকে। দুনিয়ায় যারা মদ পান করে তারা জান্নাতের শরাব থেকে বঞ্চিত থাকবে। পানি, মধু, দুধ ও শরাব কখনও বিস্বাদ বা বিবর্ণ হবে না। (ইবনে হিব্বান : ১০/২৪৯; তিরমিজি : ২৫৭১; কানযুল উম্মাল : ৩১৮৪৬, ৩৯২৩৯; ইবনে আবি শায়বা : ১৫৯৩৮; তাফসির ইবন কাসির : ৪/১৭৬)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে হাজির হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য রয়েছে দুটি উদ্যান। উভয় উদ্যানই ঘন শাখা-পল্লববিশিষ্ট। উভয় উদ্যানে আছে বহমান দুটি ঝরনা।’ (সুরা আর-রাহমান : ৪৬-৫০)। উত্তাল ও প্রবাহ মুহূর্তের জন্য থেমে থাকবে না। দুই নদীর তীরে অবসর ও বিশ্রামের জন্য থাকবে সারি সারি তাঁবু, আনন্দোপকরণ ও সেবক-সেবিকা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

﴿ مَّثَلُ ٱلۡجَنَّةِ ٱلَّتِي وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۖ فِيهَآ أَنۡهَٰرٞ مّن مَّآءٍ غَيۡرِ ءَاسِنٖ وَأَنۡهَٰرٞ مِّن لَّبَنٖ لَّمۡ يَتَغَيَّرۡ طَعۡمُهُۥ وَأَنۡهَٰرٞ مِّنۡ خَمۡرٖ لَّذَّةٖ لِّلشَّٰرِبِينَ وَأَنۡهَٰرٞ مِّنۡ عَسَلٖ مُّصَفّٗىۖ وَلَهُمۡ فِيهَا مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ ﴾ [محمد: ١٥] 

মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত: তাতে আছে নির্মল পানির নহরসমূহ, আছে দুধের নহরসমূহ যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহরসমূহ, আছে পরিশোধিত মধুর নহরসমূহ এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে প্রত্যেক প্রকারের ফলমূল। (মুহাম্মদ:১৫)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلۡمُتَّقِينَ فِي مَقَامٍ أَمِينٖ ٥١ فِي جَنَّٰتٖ وَعُيُونٖ ٥٢ ﴾ [الدخان: ٥١، ٥٢]

নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে— উদ্যান ও ঝরনার মাঝে।
(আদ দুখান:৫১-৫২)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন:

﴿ فِيهِمَا عَيۡنَانِ تَجۡرِيَانِ ٥٠ ﴾ [الرحمن: ٥٠]

উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রবাহমান দুই প্রস্রবণ।
(আর রাহমান:৫০)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন:

﴿ فِيهِمَا عَيۡنَانِ نَضَّاخَتَانِ ٦٦ ﴾ [الرحمن: ٦٦]

উভয় উদ্যানে আছে উচ্ছলিত দুই প্রস্রবণ। (আর রাহমান:২২)

সূরা যারিয়াতে বলা হয়েছে:

﴿ إِنَّ ٱلۡمُتَّقِينَ فِي جَنَّٰتٖ وَعُيُونٍ ١٥ ءَاخِذِينَ مَآ ءَاتَىٰهُمۡ رَبُّهُمۡۚ إِنَّهُمۡ كَانُواْ قَبۡلَ ذَٰلِكَ مُحۡسِنِينَ ١٦ ﴾ [الذاريات: ١٥، ١٦] 

অবশ্য মুক্তাকী লোকেরা সেদিন বাগ-বাগিচা ও ঝরনাধারাসমূহের পরিবেষ্টনে অবস্থান থাকবে। তাদের রব তাদেরকে যা দেবে সানন্দে তারা তা গ্রহণ করতে থাকবে। (এটা এজন্য যে) তারা এর আগে মুহসিন (সদাচারী) বান্দা হিসেবে পরিচিত ছিলো।(সূরা যারিয়াত: ১৫-১৬)

বাগানসমূহের নিচ দিয়ে প্রবাহের অর্থ হচ্ছে, বাগানসমূহের পাশ দিয়ে নদী নালা প্রবাহমান থাকবে। কেননা- বাগ-বাগিচা যদিও নদীর কিনারে হয় তবু তা নদী থেকে একটু উচু জায়গাই হয়ে থাকে এবং নদী ও বাগান থেকে সামান্য নিচু নিয়েই প্রবাহিত হয়।

পক্ষান্তরে যে সমস্ত জায়গায় ঝরনার কথা বলা হয়েছে সেখানে বাগান এবং ঝরনা একত্রে থাকবে একথাই বলা হয়েছে। আমরা জানি বাগানের মধ্যে বা একই সমতলে ঝরনা থাকা সম্ভব। শুধু সম্ভবই নয় বাগানের শোভা বর্ধনের একটি অন্যতম উৎসও বটে। তাই কুরআনের ভাষায় হচ্ছে:

﴿ فِي جَنَّٰتٖ وَعُيُونٖ ٥٢ ﴾ [الدخان: ٥٢] 

সেদিন তারা বাগ-বাগিচা ও ঝরনাসমূহের পরিবেষ্টনে অবস্থান করবে।

আরো বলা হয়েছে

﴿ وَدَانِيَةً عَلَيۡهِمۡ ظِلَٰلُهَا وَذُلِّلَتۡ قُطُوفُهَا تَذۡلِيلٗا ١٤ ﴾ [الانسان: ١٤] 

জান্নাতের ছায়া তাদের উপর বিস্তৃত হয়ে থাকবে এবং তার ফলসমূহ সর্বদা আয়ত্বের মধ্যে থাকবে। (সূরা দাহর: ১৪)

একই জায়গায় নানা ধরনের ফুল ফলের বাগান, বড় বড় ছায়াদার বৃক্ষরাজি, ঝরনাসমূহ, সাথে বিশাল আয়তনের অট্টালিকাসমূহ,পাশ দিয়ে প্রবাহমান নদী, একত্রে এগুলোর সমাবেশ ঘটলে পরিবেশ কত মোহিনী মনোমুগ্ধকার হতে পারে তা লিখে বা বর্ণনা করে বুঝানো কোনক্রমেই সম্ভব নয় শুধুমাত্র মনের চোখে কল্পনার ছবি দেখলে কিছুমাত্র অনুমান করা সম্ভব।

মুআবিয়া রাযি আল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« إن في الجنة بحر الماء , وبحر العسل , وبحر اللبن , وبحر الخمر , ثم تشقق الأنهار بعد » . ( رواه الترمذي ) .

নিশ্চয়ই জান্নাতের মধ্যে থাকবে পানির সমুদ্র, মধুর সমুদ্র, দুধের সমুদ্র এবং মদের সমুদ্র; অতঃপর নদী-নালার ব্যবস্থা করা হবে। [তিরিমিযী, ২৫৭১]

জান্নাতের নদীসমূহের পানির রং ও স্বাদ সর্বদা অপরিবর্তিত থাকবে

আবু হুরাইরাহ রাযি আল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "সাইহান, জাইহান, ফোরাত ও নীল জান্নাতের নদী। (সহিহ মুসলিম- কিতাবুল জান্নাত)

হাকীম বিন মোয়াবিয়া তার পিতা থেকে তিনি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, জান্নাতে পানির সাগর, মধুর সাগর, দুধের সাগর ও শরাবের সাগর রয়েছে। এগুলো থেকে পরে আরো নহরের শাখা-প্রশাখা বের হবে। (তিরমিজী)

আবু সাঈদ খুদরী রাযি আল্লাহু তা'য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,আল্লাহ্‌ স্বীয় দয়ায় যাকে খুশি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। (অতঃপর দীর্ঘদিন পর বলবেন) দেখ যে ব্যক্তির অন্তরে বিন্দু পরিমাণ ঈমান আছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের কর। তখন তারা এমন অবস্থায় বের হবে যে তাদের শরীর কয়লার ন্যায় জ্বলে গেছে। তখন তাদেরকে হায়াত বা হায়া নামক নদীতে নিক্ষেপ করা হবে। তখন তারা এমনভাবে সজীব হয়ে উঠবে, যেমন বন্যার আবর্জনার মাঝে চারাগাছ সজীব হয়ে উঠে। তোমরা কি কখনো দেখনি যে কেমন হলুদ রং বিশিষ্ট হয়ে ওঠে। (সহীহ মুসলিম কিতাবুল ঈমান)

কাওসার নদী

আনাস ইবনু মালিক রাযি আল্লাহু তায়ালা আনহু সূত্রে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি জান্নাতে ভ্রমণ করছিলাম, এমন সময় এক নহরের কাছে এলে দেখি যে তার দু'ধারে ফাঁপা মুক্তার গম্বুজ রয়েছে। আমি বললাম, হে জিব্রীল! এটা কী? তিনি বললেন, এটা ঐ কাউসার যা আপনার প্রতিপালক আপনাকে দান করেছেন। তার ঘ্রাণে অথবা মাটিতে ছিল উত্তম মানের মিশকের সুগন্ধি" (সহিহ বুখারী : ৬৫৮১)

আবদুল্লাহ বিন ওমর রাযি আল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কাওসার জান্নাতের একটি নদী। যার উভয় তীর স্বর্ণ নির্মিত। তার পানি ইয়াকুত ও মোতির উপর প্রবাহমান। তার মাটি মেশকের চেয়েও বেশি সুগন্ধময়। তার পানি মধুর চেয়ে অধিক মিষ্টি এবং বরফের চেয়ে অধিক সাদা। (তিরমিজী)

আনাস বিন মালেক রাযি আল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল,কাওছার কি? তিনি বললেন, এটি একটি নদী, যা আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাকে জান্নাতে দান করবেন। তা দুধ অপেক্ষা সাদা এবং মধু থেকেও সুমিষ্ট। এর মাঝে রয়েছে বহু পাখি। এগুলোর গর্দান হবে উটের গর্দানের মত" উমর রাযি আল্লাহু তা'য়ালা আনহু বললেন, এগুলো তো খুব মোটা-তাজা হবে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এগুলোর আহারকারী আরো সুখী হবে। (তিরমিজী কিতাবুল জান্নাহ)

জান্নাতের ঝরনাসমূহ

কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন, 'তাদের সামনে ঘুরে ঘুরে রুপার পাত্র পরিবেশন করা হবে আর সাদা পাথরের পানপাত্র। সেই সাদা পাথরও হবে রুপার তৈরি। তারা এগুলোকে যথাযথ পরিমাণে ভর্তি করবে। তাদেরকে পান করানোর জন্য এমন পাত্র পরিবেশন করা হবে যাতে আদার মিশ্রণ থাকবে। সেখানে আছে একটা ঝরনা, যার নাম সালসাবীল। (সূরা আদ দাহর: ১৫-১৮)

মহান আল্লাহ বলেন, (অপরদিকে) নেক্‌কার লোকেরা এমন পানপাত্র থেকে পান করবে যাতে কর্পুরের সংমিশ্রণ থাকবে। আল্লাহর বান্দারা একটি ঝরনা থেকে পান করবে। তারা এই ঝরনাকে (তাদের) ইচ্ছেমত প্রবাহিত করবে। (সূরা আদ দাহর: ৫-৬)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের জন্য আছে নির্ধারিত রিয্‌ক- ফলমূল; আরা তারা হবে সম্মানিত। (তারা থাকবে) নিয়ামাতের ভরা জান্নাতে উচ্চাসনে মুখোমুখী হয়ে তাদের কাছে চক্রাকারে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ প্রবাহিত ঝরনার সুরাপূর্ণ পাত্র। নির্মল পানীয়,পানকারীদের জন্য সুপেয়,সুস্বাদু। নেই তাতে দেহের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু, আরা তারা তাতে মাতালও হবে না। (সূরা আস সাফ্‌ফাত: ৪১-৪৭)

আল্লাহর নবী (সা.) কে মিরাজে অনেক নিদর্শণ দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, "সিদরাতুম মুনতাহা" এটি মূলত একটি গাছ। যার রং এর বর্ণনা দেওয়া অসম্ভব। কারণ রংধনুর রং এর সাথে তা মিলবে না। তাতে আছে শত শত সোনালি রংঙ্গের প্রজাপতি। আল্লামা নববী (রহ.) বলেছেন, এর মধ্যে চারটি নদী আছে, দুটি দুনিয়াতে এবং দুটি জান্নাতে প্রবাহিত হয়। দুনিয়ার দুটি হল, নীলনদ আর উইফ্রেটিস বা ফোরাত নদী(কেমন করে প্রবাহিত-তা আমাদের জ্ঞানের উর্ধ্বে) আর জান্নাতের দুটি- হাউজে কাওছার ও সানসাবিল। 

সিদরাতুল মুনতাহা এর কিছু উপরে আল্লাহর আরশ সমাসীন। কিন্তু আল্লাহর কোনো সৃষ্টি সিদরাতুল মুনতাহা অতিক্রম করে সিদরাতুল মুনতাহা এর কিছু উপরে আল্লাহর আরশ সমাসীন। কিন্তু আল্লাহর কোনো সৃষ্টি সিদরাতুল মুনতাহা অতিক্রম করে নি।

ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেছেন, পৃথিবী থেকে যা কিছু পাঠানো হয়, তা সিদরাতুল মুনতাহায় এসে থেমে যায়। আর আল্লাহ কোনো কিছু পৃথিবীতে প্রেরণ করলে তাও সিদরাতুল মুনতাহা থেকে প্রেরণ করেন।

কেবল মিরাজে আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (সা.) তা অতিক্রম করে আল্লাহর অতি নিকটে চলে গেছেন এবং বসে তার সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি আল্লাহকে দেখেননি, তার হিজাব বা পর্দা দেখেছেন। আল্লাহকে কেবল জান্নাতেই দেখা যাবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়