ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

তারেক-মামুনের সীমাহীন দুর্নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:০৯, ২০ জানুয়ারি ২০২১  

তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন

তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গঠন করার পরপরই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বিএনপি জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ তারেক রহমান। সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভাগ-বাটোয়ারা, কমিশন আদায়, বিদেশি শক্তিদের কাছে দেশের স্বার্থ বিলিয়ে দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপ করেন তারেক রহমান। আর তারেক রহমানের এসব অপকর্মে সহযোগিতা করেন তারই ব্যবসায়িক বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। ঘুষ ও মানি লন্ডারিংয়ের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন তারা। তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই।

তথ্যসূত্রের বরাতে এফবিআইয়ের তদন্তের বিষয়ে জানা যায়, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশনের এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিল। হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হিসেবে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ পাওয়ার জন্য তারেক ও মামুনকে ওই টাকা দিয়েছিল ঘুষ হিসেবে।

এফবিআইয়ের এজেন্ট ডেব্রা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ এই বিষয়ে তারেক ও মামুনের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আদালতের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ব্যবসায়ী খাদিজা ইসলাম সিঙ্গাপুরে মামুনের সিটি ব্যাংকে (অ্যাকাউন্ট নাম্বার: ১৫৮০৫২-০১৬-০০৮) ওই টাকা জমা দিয়েছিলেন। ওই একই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারেক রহমানের নামে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড (যার নাম্বার: ৪৫৬৮-৮১৭০-১০০৬-৪১২২) ইস্যু করা হয়। সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকের কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড নিতে তারেক রহমান তার পাসপোর্টের একটি ফটো কপি জমা দিয়েছিল (পাসপোর্ট নাম্বার: Y ০০৮৫৪৮৩) যেখানে তার পিতার নামের জায়গাতে লেখা ছিল মৃত জিয়াউর রহমান এবং মাতার নাম ছিল বেগম খালেদা জিয়া।

তারেক রহমান এই কার্ড বিভিন্ন দেশে যেমন; গ্রিস, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করেছিল এমন তথ্যই উঠে এসেছে এফবিআইয়ের তদন্তে। এভাবে মোয়াজ্জেম হোসাইন এবং মারিনা জামান ঘুষের টাকা মামুনের সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দিয়েছিল যে অ্যাকাউন্টে তারেক রহমানের সরাসরি ছিল।

মানি লন্ডারিং এর জন্য ২০১৬ সালের ২১ জুলাই বাংলাদেশের উচ্চ আদালত তারেক রহমানকে সাত বছরের জেল এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল যে, এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ ‘ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম’ ছিল এবং এ ধরনের কাজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বড় ধরনের একটি বাধা। মামুনের অ্যাকাউন্টে খাদিজা ইসলামের দেয়া ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারে খোঁজ পেয়ে সুপ্রিম কোর্ট তারেক সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন ওই টাকাটা ঘুষের টাকা।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তারেক-মামুন জুটিবদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়ন, অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেন। তাদের সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়। দেশ ও দশের ক্ষতি জেনেও তারেক রহমানের এসব অনিয়ম, দুর্নীতিরোধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বেগম খালেদা জিয়া। তাদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই তারেক দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠে বলেও গুঞ্জন শোনা যায়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়