ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, হালদায় ডিম দিল মা মাছ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০১, ২৭ মে ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। গতকাল বুধবার (২৭ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে এ নদীর কার্পজাতীয় রুই, মৃগেল, কালিবাউশ ও কাতলা মা মাছ পূর্ণাঙ্গরূপে ডিম ছাড়ে। এর আগে ২৬ মে দুপুর ১২টার দিকে ও ২৫ মে দিবাগত রাত ১২টার দিকে দুই দফা নমুনা ডিম দেওয়ার পর বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জোয়ার শেষে ভাটার সময় মা মাছেরা ডিম ছাড়তে থাকে। এতে নদীতে অপেক্ষমাণ প্রায় ৭-৮ শ জন ডিম সংগ্রহকারী সাড়ে ৩ শর বেশি নৗকা নিয়ে নদী থেকে মা মাছের ডিম আহরণ করেন। 

তবে ডিম পেয়েও মৎস্যজীবীদের মুখে হাসি ফোটেনি। হালদা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার ডিম পাওয়ার পরিমাণ অনেক কম। এ কারণে মৎস্যজীবীদের বেশির ভাগই পর্যাপ্ত ডিম পাননি। এতে তারা হতাশ হয়েছেন। 

ডিম সংগ্রহকারী ও রাউজান উপজেলা, হাটহাজারী উপজেলার মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে জানা যায়, বুধবার রাত ১টার দিকে ডিম ছাড়ার পর সকাল ৫-৬টা পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেন নদীর দুই পারের উপজেলা রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার ডিম সংগ্রহকারীরা। জানা গেছে, নদীর রামদাইশ্যাহাট, আমতুয়া, নাপিতের ঘোনা, আজিমের ঘাট, সিপাহীর ঘাট, গড়দুয়ারা, অংকুরীঘোনা, মাছুয়াঘোনা, সত্তার ঘাট, কাগতিয়া, পশ্চিম গুজরাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম পাওয়া যায়। 

ডিম সংগ্রহকারী মো. কাদের, আব্দুল কাদের, আলী আকবর বলেন, আমরা ৩-৪ কেজি করে ডিম সংগ্রহ করেছি। সাইফুল ইসলাম নামের আরেক ডিম সংগ্রহকারী বলেন, এবার ডিম বেশি পাওয়া যায়নি। একেকজন ২-৩ বা ৪ কেজি করে ডিম পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার রাত আনুমানিক ১টার দিকে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা মাছ ডিম ছাড়তে থাকে। নয়াহাট এলাকায় ৩-৪ কেজি করে ডিম পায় বলে খবর পেয়েছি।
 
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক প্রফেসর মঞ্জুরুল কিবরিয়া গতকাল ২৭ মে বৃহস্পতিবার জানান, রাত ১টা থেকে সকাল পর্যন্ত নদীতে ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করেন। এবার কী পরিমাণ ডিম ছেড়েছে মা মাছ, তা নিরূপণের কাজ চলছে। তবে এটা নিশ্চিত যে গত বছরের চেয়ে এবার ডিম দেওয়ার পরিমাণ খুবই কম। হালদায় লবণাক্ততা, ইঞ্জিনচালিত বোটের চলাচল, নদীদূষণসহ নানা কারণে ডিমের পরিমাণ কম পাওয়া গেছে।

এদিকে নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির ১৮ জন শিক্ষার্থী। প্রস্তুত ছিলেন দুই উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশের ১২ জন সদস্য। 

কয়েকজন জেলে জানান, মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দুপুরে দুই দফা নমুনা ডিম দিলেও বেশি ডিম পাওয়া যায়নি। তখন ডিম সংগ্রহকারীদের কেউ কেউ মাত্র ৫০ থেকে দেড় শ গ্রাম পর্যন্ত ডিম পেয়েছেন। ডিম সংগ্রহকারী আলী আকবর বলেন, ডিম সংরক্ষণের জন্য সরকারি হ্যাচারির পাশাপাশি অনেকে মাটির কুয়াও প্রস্তুত করছেন।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়