ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধাদের খসড়া তালিকা প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩২, ১৮ জানুয়ারি ২০২১  

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

মুক্তিযোদ্ধাদের খসড়া তালিকা আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। একইসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীদের তালিকা করার কথাও সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে বলেও জানান মন্ত্রী।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘সেবা সপ্তাহ-২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা জানান। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই লাখের মধ্যে থাকবে। এরমধ্যে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এক লাখ ৭৫ হাজারের বেশি হবে না। তাদের চূড়ান্ত তালিকা আগামী স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করা হবে।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আগামী ২৬ মার্চ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি সেগুলো চলমান থাকবে। কিন্তু যেসব মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বা স্বীকৃতি শতভাগ নিশ্চিত হওয়া গেছে, মহান স্বাধীনতা দিবসে সেটা (চূড়ান্ত তালিকা) প্রকাশ করব।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে খসড়া তালিকা প্রকাশ করব। একমাস তালিকা পর্যাবেক্ষণ করা হবে। যদি কোনো নামে ভুল-ত্রুটি থাকে বা কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে, ঠিকানায় ভুল থাকে তা সংশোধন করা হবে । নাম-পরিচয় আমাদের ন্যাশনাল আইডির সঙ্গে পরিপূর্ণ মিল থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশে যেমন পরিচয়পত্র দিয়ে একজন মানুষ সব ধরনের সার্ভিস পায়, মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা সেই ধরনের কার্ডই দেব। তার ন্যাশনাল আইডির সঙ্গে যদি পাসপোর্ট থাকে সবগুলোর একই নম্বর থাকবে। সেই নম্বরে সব রকমের সার্ভিস একজন নাগরিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাতে তিনি পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে।’

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘৩৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধা, যাদের গেজেট আছে। তাদের নিয়মিত করার জন্য আগামী ৩০ জানুয়ারি উপজেলায় তাদের গেজেট যাচাই হবে। আমরা অপেক্ষা করছি হয়তো এক লাখ ৭০ হাজারের মধ্যেই এটা (মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা) সীমিত থাকবে।’

এছাড়া শহীদ, যুদ্ধাহত, খেতাবপ্রাপ্ত, বীরাঙ্গণা মুক্তিযোদ্ধা আরও ১৫ হাজারের মতো হবে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আশা করছি— ২ লাখের নিচেই সব ক্যাটাগরির মুক্তিযোদ্ধা থাকবে। যেটা ইতোমধ্যে অনেক বেশি হয়েছিল।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে বহু লোক যাচাই-বাছাইয়ে টেকেনি, হয়তো তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছিল। সংজ্ঞা অনুযায়ী তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত নয়। আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে এগুলো (মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা) শেষ হলে আমরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা যায় কিনা সেই বিষয়টি ভেবে দেখব।’

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একই সঙ্গে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে, এরমধ্যে অনেকে আছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বা অন্যান্যভাবে সেইসব তালিকা পূর্ণতা দেয়া যায় কিনা। একইভাবে আমরা সংসদে রাজাকারের তালিকা করার জন্য আইন করার চেষ্টা করছি। মুক্তিযোদ্ধার তালিকা চূড়ান্ত করার পর আমরা এ ব্যাপারে কাজ শুরু করব। আইনানুগভাবে ও নীতিমালা তৈরি করে সেটা পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

রাজাকারের তালিকা করতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনে এই সংসদ অধিবেশনে পাস হবে কিনা— প্রশ্নে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দিয়ে দিয়েছি। আমি খবর পেয়েছি এই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হবে। সংসদে উত্থাপিত হলে সেটা আবার সংসদীয় কমিটিতে যায়। আবার সংসদে আসে। সেই ফর্মালিটিসগুলো মেনে আইনটা এই অধিবেশনে পাস হবে কিনা, এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আইনটি পাস হওয়ার পর দ্রুত তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হবে।’

এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়