ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ-ই ছিলো না বাংলাদেশে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩৭, ৪ জুন ২০২৩  

বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ-ই ছিলো না বাংলাদেশে

বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ-ই ছিলো না বাংলাদেশে

বর্তমানে দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুতায়ন হয়েছে শহর, গ্রাম ও চরাঞ্চলেও। স্বাধীনতার পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের জনগোষ্ঠীর ৪৭ শতাংশ বিদ্যুতের সুবিধা পেয়েছিল। এরপর গত এক যুগে বাকি ৫৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে। বর্তমানে হঠাৎ করে পৃথিবীর সব দেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে, যদিও বিষয়টি সাময়িক। তবে এরই মধ্যে এ বিষয়টিকে নিয়ে সমালোচনা শুরু করে দিয়েছে বিএনপি। তারা বলছেন, বিদ্যুৎ কেন যাবে? অথচ বিএনপির শাসনামলে দেশে বিদ্যুৎ ছিলই না। মাঝে মাঝে আসতো।

বিএনপির এমন দুমুখো স্বভাব নিয়েও ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, নিজেদের সময় বিদ্যুৎ দিতেই পারেনি, বরং বিদ্যুতের নামে বিভিন্ন স্থানে শুধুমাত্র খুঁটি বসানো হয়েছিলো। এখন বিদ্যুৎ নিয়ে তাদের মুখে বড় বড় কথা মানানসহ হচ্ছে না। বিষয়টি কপটতার পর্যায়ে পড়ে।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, যাদের শাসনামলে বিদ্যুৎ ছিলো না, তারা বলছে বিদ্যুৎ নিয়ে কথা। অথচ, ২০০৬ সালে বিদ্যুৎ চাওয়ায় বিএনপির আমলে ২০ জন সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ‘বিদ্যুৎ চাইলে গুলি করত বিএনপি, আওয়ামী লীগ পৌঁছে দিলো আলো।’

বিভুরঞ্জন সরকার আরো বলেন, ‘২০০৫ সালের রমজান মাস। কার্তিকের কাঠফাটা গরমে সাধারণ মানুষের প্রাণান্তকর অবস্থা। ঢাকা শহরজুড়ে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। আর সারাদেশে তো বিদ্যুৎই থাকে না। এমনকি ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময়েও বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষুব্ধ হয় আপামর জনতা। অথচ সে সময় শুধু বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান। ফলে বিএনপির আমলজুড়েই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় দেশ।’

আওয়ামী লীগের সময়ের তুলনায় বিএনপির সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছিল জানিয়ে বলা হয়, ‘১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ যখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৩শ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ করেছিল, ২০০১ সালে আবার বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে তারেক রহমানের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা কমে হয় মাত্র ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। তার অর্ধেকই সরবরাহ করা হতো ঢাকার কয়েকটি অভিজাত এলাকায়। বাকি অর্ধেক সারাদেশের জন্য। এতে শীতকালেও নজিরবিহীনভাবে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেয় দেশজুড়ে।’

শুধু তাই নয়, ‘বিএনপি-জামায়াতের আমলে খোদ ঢাকাতেও দিনের বেলা মোমবাতি জ্বালিয়ে নিয়মিত স্কুলের ক্লাস নিতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি উত্তোলনও ব্যাহত হয়েছে শহরে। ফলে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে রাজধানীর সাধারণ জনগণ।’

‘এ সময় গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ না থাকায় চাষাবাদের জন্য ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন কৃষকরা। সেই সুযোগে ডিজেল ও সারের দামও বাড়িয়ে দেয় ‘হাওয়া ভবন’ সিন্ডিকেট। কিন্তু দেশের মানুষ তখন আর সহ্য করতে না পেরে তারেক-মামুন গংদের লুটপাটের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে।’

আজকের বাংলাদেশ বদলে গেছে। শতভাগ বিদ্যুতের ওপর ভর করে দেশ ডিজিটাল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। অথচ এখনকার প্রজন্ম জানেই না একসময় বিদ্যুতের জন্য মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ যাওয়ার প্রয়োজন আছে, নতুবা বিএনপির শাসনামলে দেশে যে বিদ্যুৎ থাকতোই না সেটা মানুষ ভুলে যেতে পারে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়