ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩০

মাইয়া প্রোটিনেই দূর হবে সন্তানধারণের সমস্যা

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২  

মাইয়া প্রোটিনেই দূর হবে সন্তানধারণের সমস্যা

মাইয়া প্রোটিনেই দূর হবে সন্তানধারণের সমস্যা

ঘরে ঘরে এখন বন্ধ্যত্বের সমস্যা। নারী বা পুরুষ, উভয়ের সন্তানহীনতার নেপথ্যেই রয়েছে জীবনযাত্রায় অনিয়ম। খাদ্যাভ্যাসের জটিলতা, মাত্রাতিরিক্ত শারীরিক-মানসিক চাপ। এ সবের প্রকোপেই এই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।

সন্তানধারণের জন্য যেমন সুস্থ স্বাভাবিক ডিম্বাশয় প্রয়োজন যাতে তৈরি হতে পারে উৎকৃষ্ট ডিম্বাণু, ঠিক তেমনই প্রয়োজন সুস্থ-সবল-সচল শুক্রাণু। যদি শুক্রাণুর মান কোনো কারণে খারাপ হয় অথবা শুক্রাশয় থেকে শুক্রাণু নির্গমনের পথ সুগম না হয়, তখন বন্ধ্যত্ব আসতে পারে। হালফিলে চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রভূত উন্নতির দৌলতে অনেকেই বাবা-মা হওয়ার সাধ পূরণ করতে পারছেন। 

আইইউআই (ইন্ট্রা ইউটেরাইন ইনসেমিনেশন), ডিআই (ডোনার ইনসেমিনেশন), ইকসি (ইন্ট্রা সাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন) এবং টেসা (টেস্টিকুলার স্পার্ম অ্যাসপিরেশন)- কে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসায় অসাধারণ এক বিপ্লব বলা যায়। এ ছাড়াও রয়েছে বহুল প্রচলিত আইভিএফ পদ্ধতি। তবে এই সব পদ্ধতিগুলোই বেশ খরচসাপেক্ষ, মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।

সম্প্রতি বন্ধ্যত্বের চিকিৎসায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলেন বিজ্ঞানীরা! তারা এক প্রকার প্রোটিন আবিষ্কার করেছেন যা, শুক্রাণু-ডিম্বাণুর পুষ্টির পাশাপাশি নিষেকের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা। প্রোটিনটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মাইয়া’। 

গ্রিসের মাতৃত্বের দেবীর নাম অনুসারে এই প্রোটিনের নামকরণ করা হয়েছে। সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে গ্যামেট ফিউশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বিজ্ঞানীরা এক প্রকার প্রোটিন-৩ ধরনের রিসেপ্টার এফসি আবিষ্কার করেছেন। তা নিষেকের সময়ে ডিস্বাণু যে শুক্রণুর সাহায্যে নিষিক্ত হতে চাইছে, সেই শুক্রণুটির প্রোটিনের সঙ্গে দৃঢ় ভাবে আবদ্ধ হতে সাহায্য করে। এই আবিষ্কারটি বন্ধ্যত্ব দূরীকরণের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অব চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের ক্যাটিনা কমরস্কভার নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক দল এই গবেষণাটি চালিয়েছিল। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মানব ওসাইট প্রোটিনের উৎপাদনের জন্য কোষ কালচারের গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের আশা, এই গবেষণাটির ফলাফল অনেক ম্লান মুখে হাসি ফোটাতে পারবে।

কমরস্কভা জানিয়েছেন, এটি প্রায় দুই দশকের গবেষণার ফলাফল। আমেরিকা, ব্রিটেন ও জাপান-সহ একাধিক দেশ এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিল। এই গবেষণাটি প্রাথমিক ভাবে ব্রিটেনের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়য়ে হ্যারি মুরের গবেষণাগারে শুরু হয়েছিল। 

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, এই পরীক্ষা করার জন্য তাদের নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এই প্রকার প্রোটিন যেহেতু শুধু মাত্র মানুষের দেহেই পাওয়া যায়, তাই পরীক্ষা করার জন্য তাদের সম্মতি পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকি, গবেষণাটি পুরোপুরি মানুষের শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিয়েই করা হয়েছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়