ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

যেসব গুণগুলো মর্যাদা বাড়িয়ে দেয় মুমিনের

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৩৯, ২৬ মে ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র জীবনযাপনই সফলতার চাবিকাঠি। কোরআন মজিদের বাণী, ‘সফল হলো তারা যারা আত্মশুদ্ধি অর্জন করল, আর ব্যর্থ মনোরথ হলো তারা যারা নিজেকে কলুষ আচ্ছন্ন করল।’ (সুরা-৯১ শামস, আয়াত: ৯-১০)। ‘সাবধান! একমাত্র বিশুদ্ধ ধর্মকর্মই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য।’ (সুরা-৩৯ জুমার, আয়াত: ৩)।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআন মজিদে তার প্রিয় বান্দাদের পরিচয় উল্লেখ করে বলেন, ‘দয়াময় আল্লাহর প্রকৃত বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের যখন অজ্ঞ লোকে মূর্খতাসুলভ সম্বোধন করে তখনো তারা সালাম ও শান্তির বাণী বলে। তারা রাত্রি যাপন করে তাদের প্রতিপালকের উদ্দেশে সেজদায় অবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে ইবাদত–বন্দেগির মাধ্যমে এবং তারা বলে, “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের হতে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত করুন; উহার শাস্তি তো নিশ্চিত বিনাশ! নিশ্চয়ই তা অস্থায়ী ও স্থায়ী আবাস হিসেবে নিকৃষ্ট!” আর যখন তারা ব্যয় করে তখন অপচয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না; বরং তারা মধ্যপন্থায় থাকে। তারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহ বা মাবুদকে ডাকে না। 

আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের মহান শিক্ষক হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সা.) পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। তিনি মানুষকে কল্যাণের পথ দেখিয়েছেন। মানুষের দুনিয়া ও পরকালের সফলতায় অসংখ্য দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। ছোট্ট একটি হাদিসে ৪টি গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। যার দুইটি মেনে চলতে হবে। দুইটি ছেড়ে দিতে হবে, যা মানুষকে অনন্য মর্যাদা ও সফলতার পথ দেখাবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঈমানের দুইটি শাখা-
১. লজ্জা-সম্ভ্রম ও
২. অল্প কথা বলা ।
আর মুনাফেকির দুইটি শাখা-
১. অশ্লীলতা ও
২. বাকপটুতা (বাচালতা)। (তিরমিজি, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, মিশকাত)

উল্লেখিত হাদিসে লজ্জা ও অল্প কথা বলাকে ঈমানের শাখা বলা হয়েছে। আবার অশ্লীল কথা ও কাজ এবং বেশি কথা বলাকে মুনাফেকির শাখা হিসেবে ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি। হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী, ঈমানদার ব্যক্তির অন্য মর্যাদা ও সফলতা পেতে ৪টি কাজ করতে হবে। তাহলো-
১. সব সময় লজ্জা ও সম্ভ্রম রক্ষা করে চলা।
২. অল্প কথা বলা।
৩. অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা।
৪. বেশি কথা না বলা।

একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ও আত্ম-মর্যাদা রক্ষায় উল্লেখিত ৪ গুণ অর্জনের বিকল্প নেই। যারাই হাদিসের এ ৪টি কাজের উপর আমল করবে। আল্লাহ তাআলা তাদের দান করবেন দুনিয়া ও পরকালের অনন্য মর্যাদা ও সফলতা।

মুমিন বান্দার জন্য আরও ৪টি বিষয় স্মরণ রাখা জরুরি-
১. মুমিন যখন কথা বলে, তখন তা হবে মানুষের কল্যাণে বা মানুষকে বোঝানোর জন্য।
২. মুমিনের নীরব থাকে নিরাপদের থাকার জন্য।
৩. মুমিন একাকি থাকে, কোনো কিছু অর্জন করার জন্য।
৪. আর মুমিন মানুষের সঙ্গে মিশে কোনো কিছু শেখার জন্য।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত করা। ঈমানদারের কথা বলা, নীরব থাকা, একাকি থাকা কিংবা কারো সঙ্গে চলাফেরা যেন হয় কল্যাণের জন্য। যার ফলে দুনিয়া ও পরকালে পাবে শান্তি সফলতা।

বিশেষ করে দুনিয়ার জীবনে যাবতীয় অশ্লীলতা ও খাবার কাজ থেকে বেঁচে থাকতে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এ দোয়া করা-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ الْاَدْوَاءِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আ’মালি ওয়াল আহওয়ায়ি, ওয়াল আদওয়ায়ি।’
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে খারাপ (নষ্ট-বাজে/অশ্লীল) চরিত্র, অন্যায় কাজ ও কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং বাজে অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ বালাই থেকে আশ্রয় চাই।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়