রিহ্যাব : মেট্রোরেলের কারণে উত্তরা ও মিরপুরে ফ্ল্যাটের চাহিদা বেড়েছে

আর মাত্র দিন তিনেক পরই উদ্বোধন হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল। শুরুতে রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে এ ট্রেন। এতে আপাতত সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন উত্তরা ও মিরপুর এলাকার বাসিন্দারা। আর এই যাতায়াত সুবিধা বাড়ায় এ বছর আবাসন মেলায় উত্তরা ও মিরপুর এলাকার ফ্ল্যাটের চাহিদাও বহুগুণ বেড়েছে।

পাঁচদিনব্যাপী এ মেলার শেষ দিন গতকাল রোববার (২৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্যই জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

আবাসন মেলায় এ বছর অনেক অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের পণ্য তুলে ধরেছেন। বিদেশ থেকেও প্রবাসীরা পণ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন।

এ বছর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হলেও আগামী বছরের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের শুরুতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এ উড়াল ট্রেন চলবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে লাখ লাখ মানুষের যাতায়াত সুবিধা সহজ হবে। ফলে উত্তরা ও মিরপুরের মতো এলাকায় ফ্ল্যাট-প্লটের চাহিদা এবং দাম বাড়ছে।

সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ বলেন, এ বছর ফ্ল্যাটের দাম আগের চেয়ে তুলনামূল বেশি। রড-সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি এবং নতুন ড্যাপে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) হ্রাসসহ নানা কারণে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নতুন ড্যাপে ঘোষিত ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) এর পরিমাণ বাড়ানো হবে, এমন প্রত্যাশা করে আবাসন খাতের জন্য নীতি সহায়তা চাওয়া হয় সরকারের কাছে।

কামাল মাহমুদ বলেন, মেলার আসল উদ্দেশ্য ব্র্যান্ডিং। এখানে যেসব ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছেন তারা সবাই ফ্ল্যাট বা প্লট কিনবেন। কেউ হয়তো এখন কিনবেন, কেউবা সামনের বছরগুলোতে। মেলায় যারা এসেছেন তারা আসলে সবাই ক্রেতা। কারণ, এ মেলায় বিনোদনমূলক কিছু নেই, যারা মেলায় টাকা দিয়ে টিকেট কেটে প্রবেশ করেছেন তারা সবাই ক্রেতা।

তিনি বলেন, মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের কাছে পণ্যের মান সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। ক্রেতা-দর্শনার্থীরা প্রোডাক্ট দেখে গেলেন, এখন তারা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবেন। একসঙ্গে এতো ক্রেতা পাওয়া একমাত্র রিহ্যাব ফেয়ারেই সম্ভব।

রিহ্যাব সহ-সভাপতি (অর্থ) ও মেলা বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, আবাসন মেলা রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকায় দুপুরেই তা শেষ করা হলো। নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে মেলা শেষ হলেও উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

তিনি বলেন, এই কদিনে ঢাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া আবাসন খাতকে উৎসাহিত করেছে, আশান্বিত করেছে। মেলায় বিক্রির চেয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান আসে ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য। তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড়সহ নানা ধরনের অফার দিয়েছে। মেলা শেষ হলেও আরও কয়েকদিন এ সুযোগ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানগুলো দিতে পারবে। ক্রেতারা তাদের প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে পারবেন।

গত রিহ্যাব ফেয়ার-২০২১ এ প্রায় ৩৯৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ফ্ল্যাট, প্লট ও বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি এবং বুকিং হয়েছিল। এরমধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি এবং বুকিং হয় ১৯৮ কোটি টাকার। প্লট ১২৫ কোটি এবং ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বাণিজ্যিক স্পেস বুকিং এবং বিক্রি হয়। এছাড়া ব্যাংক কমিটমেন্ট প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছে ১৯ হাজার ২৩৭ জন।সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রিহ্যাব প্রেস-মিডিয়া কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব পরিচালক মো. সুলতান মাহমুদ, রোটারিয়ান এস এম এমদাদ হোসেন ও ড. এ এফ এম কামাল উদ্দিনসহ রিহ্যাব পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।