ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

রোজার মধ্যে কঠিন আন্দোলনে যাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২৩, ২৮ মার্চ ২০২৩  

রোজার মধ্যে কঠিন আন্দোলনে যাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি

রোজার মধ্যে কঠিন আন্দোলনে যাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি

সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগ্রহী হয়ে বারবার কর্মসূচি ঘোষণা করলেও তাতে সায় দেয়নি অন্যান্য নেতাকর্মীরা। বরং দিচ্ছেন বাগড়া। বলছেন, রোজার মাঝখানে আন্দোলন করাটা বোকামি হবে। কিন্তু ফখরুলও নাছোড়বান্দা। তিনি বলছেন, দেরি করাটা ঠিক হবে না। যা করার এখনই করতে হবে।

দায়িত্বশীল সূত্রের তথ্যমতে, সরকার পতনের রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি চক্র ইতোমধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। যে প্রজেক্টের কাজ হচ্ছে, বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার চালানো এবং সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করা। লন্ডনে পলাতক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যার পূর্ণ দেখভালের দায়িত্বে আছেন। তিনি তার মতো করে সব চালালেও তাতে ঘোর আপত্তি মির্জা ফখরুলের।

দলীয় এই মহাসচিবের ভাষ্য, সরকারের বিরুদ্ধে শুধু অপপ্রচার চালালেই হবে না। পাশাপাশি শক্তিশালী আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু তার এই কথা মানতে নারাজ তারেকপন্থীরা। ইতোমধ্যে তা প্রত্যাখ্যানও করেছেন। বর্তমানে এ নিয়ে দলের মধ্যে সুস্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

তারেক অনুসারীদের দাবি, রোজা সময় আন্দোলনে গেলে যে হিতে বিপরীত হবে না, তার কি গ্যারান্টি! এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। কারণ, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি এই আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বড় ধরনের আন্দোলনে গেলেই খালেদার বর্তমান মুক্ত জীবনে ব্যাঘাত ঘটবে। আটকে যাবে তার বিদেশযাত্রাও। যেটা ফখরুলের মত সিনিয়র নেতা অনুধাবন করতে পারছেন না। তাছাড়া বর্তমানে চলছে পবিত্র মাহে রমজান। একটি আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে যে সময়টুকু লাগে, তা বিএনপির হাতে নেই। এটাই বাস্তব। সঙ্গে রয়েছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ, বিএনপির সাংগঠনিক ভঙ্গুরতা। সবমিলিয়ে তারেক পন্থীরা চাইছেন না, ফখরুলের আবেগপ্রবণ কাঁচা বুদ্ধিতে কিছু করতে।

তবে এগুলোকে খোঁড়া যুক্তি হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলছেন, তারা যে যুক্তিগুলো দেখাচ্ছেন, তা স্রেফই অজুহাত। কারণ, সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। ভবিষ্যতে যে বিএনপির সামনে আরও দুর্দিন অপেক্ষা করছে না, সেটা নিশ্চিত করে কে বলবে! তাই, এখনই আন্দোলনের উৎকৃষ্ট সময়। প্রয়োজনবোধে সবকিছু একটু গুছিয়ে নিয়েই তৃনমূলসহ সবাইকে নিয়ে শক্তিশালী আন্দোলনে যাওয়া উচিত। তা নাহলে আন্দোলন আজীবনই ‘ঈদের পরে’ থেকে যাবে। আর এভাবে চললে ১ বছর কেনো ১০ বছর পরও কোনো আন্দোলন গড়ে তোলা যাবে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপিতে এখন আন্দোলনের পক্ষের শক্তি এবং বিরোধী শক্তির মধ্যে এক ধরনের প্রকাশ্য মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি দিনকেদিন এমন অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, আন্দোলন নিয়ে বিভক্ত বিএনপি যে কোনো মুহূর্তেই ভাঙ্গনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিলুপ্ত হবে। সময় পরিক্রমায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়