ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সুখী হতে টাকা লাগে না : গবেষণা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ২ এপ্রিল ২০২৩  

সুখী হতে টাকা লাগে না : গবেষণা

সুখী হতে টাকা লাগে না : গবেষণা

কেউ সুখী হওয়ার মানদণ্ডকে অর্থের সঙ্গে তুলনা করেন, কেউ আবার শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে নিজেকে সুখী মনে করেন। তবে একটি বিষয়ে সবাই একমত। সেটি হলো- সুখী হওয়ার সবচেয়ে উঁচু মানদণ্ড হলো শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা।

এদিকে, মানুষ কীভাবে সুখী হয় কিংবা সুখী হতে কী প্রয়োজন- তা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

কীভাবে গবেষণাটি করা হয়?
দুই দল এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করে। প্রথম দলে ছিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা কিছু ছাত্রছাত্রী। অন্য দলে ছিল বোস্টন শহরের দরিদ্র পরিবারের (নমুনা দল) মানুষরা। ২/৩ বছর পর পর তাদের ডাটা নেয়া হতো।

এক্ষেত্রে তাদের মেডিকেল রিপোর্ট দেখা হতো, স্বাস্থ্যগত কোনো পরিবর্তন হয়েছে কিনা। এছাড়া ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সাক্ষাৎকার নেয়া হতো। কর্মক্ষেত্র ও সামাজিক সম্পর্কের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হতো।

২০১৪ সালে গবেষণাটি শেষ হয়। কী পাওয়া গেছে দীর্ঘ ৭৫ বছরের গবেষণায়?
নমুনা দলে অর্থাৎ দরিদ্র মানুষের দলে যারা ছিলেন তাদের প্রথম সাক্ষাৎকারে ৮০ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন, অর্থ, ক্ষমতা ও ভালো অবস্থান মানুষকে সুখী ও পূর্ণ করে। তবে ফলাফলে উঠে আসে চমক! গবেষণা বলছে, ‘সুসম্পর্কই মানুষকে সুখী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে’।

এ গবেষণা থেকে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানা যায়
১. যাদের মধ্যে দৃঢ় সামাজিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল, তাদের শারীরিক সুস্থতার হার ছিল অনেক বেশি। পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে যাদের সুসম্পর্ক বজায় ছিল তারা ছিলেন ব্যক্তিজীবনে সুখী ও জটিল রোগমুক্ত। অন্যদিকে যারা আত্নকেন্দ্রিক ও পারিবারিক কিংবা সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকেন তারা ব্যক্তিজীবনে একাকিত্ব ও মধ্যবয়সে নানা শারীরিক রোগে ভোগেন।

২. গুণগত সম্পর্ক। আপনার সঙ্গে কত বেশি মানুষের সম্পর্ক আছে তার চেয়ে গুণগত সম্পর্কের সংখ্যা আপনার জীবনে কত বেশি তা বেশি জরুরি। যাদের মধ্যে কোয়ালিটি সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল তাদের মানসিক প্রশান্তি ছিল ও জটিল শারীরিক রোগ অনেক কম দেখা গিয়েছিল।

৩. যাদের মধ্যে সুসম্পর্কের অভাব ছিল মেডিকেল রিপোর্টে দেখা যায়, তাদের শারীরিক/ মানসিক রোগের পাশাপাশি মস্তিস্কের নানা ত্রুটি আছে।

মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা আমাদের নিজেদের ভালো থাকার জন্যই জরুরি। সম্পর্কের অবনতি ঘটলে সেটা সরাসরি শরীরে প্রভাব না ফেললেও মনে তার বিরুপ প্রভাব পড়ে। মানসিক অশান্তি যদিও বাইরে থেকে দেখা যায় না। মানসিক অসুস্থতার পেছনে জোরালো কারণ সম্পর্কের অবনতি।

বর্তমানে সবাই কর্মব্যস্ত জীবন কাটান। ব্যস্ততা সবার জীবনেই আছে, তাই বলে ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত করা উচিত নয়। কর্মব্যস্ততার খাতিরে অনেকে হয়তো পরবারকেও ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না, এতে কিন্তু ক্ষতিই হচ্ছে। অর্থ, ক্ষমতা ও ভালো অবস্থান মানুষকে সুখী ও পূর্ণ করে না। সুসম্পর্কই মানুষকে সুখী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে তোলে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়