ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩০

স্বামীকে ৬ টুকরো, পাঁচ দিনের রিমান্ডে ফাতেমা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ২ জুন ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মহাখালী থেকে ময়না মিয়া নামে একজনের হাত-পা ও মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতের প্রথম স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিন আসামি ফাতেমার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বনানী থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে ভুক্তভোগী ময়না হত্যার ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে গতকাল সোমবার ফাতেমাকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ফাতেমার দেখানো জায়গায় গিয়ে ময়না মিয়ার মাথা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ফাতেমাকে। পরে বোরখা, ভিকটিমের রক্তমাখা জামাকাপড়, ধারালো ছুরি, ধারালো দা, বিষাক্ত পেয়ালা, শীল-পাটা উদ্ধার করে পুলিশ।

এরপর পুলিশ তার কাছে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চায়। পুলিশের কাছে অকপটেই সব স্বীকার করেন ফাতেমা। স্বামীকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনায় ফাতেমা পুলিশকে বলেন, হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী কড়াইল এলাকা থেকে ফাতেমা দুই পাতা ঘুমের ট্যাবলেট কিনে শুক্রবার রাতে জুসের সঙ্গে ময়না মিয়াকে খাইয়ে দেন। ময়না মিয়া সারারাত-সারাদিন ঘুমে অচেতন থাকলে সন্ধ্যার দিকে কিছুটা জ্ঞান ফিরে পায় এবং স্ত্রীকে গালমন্দ করে আক্রমণ করতে গিয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়েন।

একপর্যায়ে ময়না মিয়া পানি পানি বলে আর্তনাদ করলে ফাতেমা আবারো তার মুখে ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো জুস ঢেলে দেন। এ পর্যায়ে ময়না মিয়া নিস্তেজ হয়ে খাটে পড়ে গেলে ফাতেমা তার ওড়না দিয়ে ময়না মিয়ার দুই হাত শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখেন এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেন। এ সময় ময়না মিয়া আর্তনাদ করতে থাকলে ফাতেমা বুকের উপরে বসে তার ঘরে থাকা স্টিলের চাকু দিয়ে গলাকাটা শুরু করেন। ধস্তাধস্তি করে ময়না মিয়ে ওড়না ছিঁড়ে তার হাত মুক্ত করে ও ফাতেমার হাতে খামচি এবং মুখ খুলে কামড় দেয়। এতে ফাতেমার রাগ আরো বেড়ে যায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ময়না ও ফাতেমা দুজনেই খাট থেকে পড়ে গেলে ফাতেমা ভিকটিমের বুকের উপরে উঠে গলার বাকি অংশ কেটে দেয়।

পরে সকালে ফাতেমা লাশ গুম করার জন্য ধারালো চাকু দিয়ে ময়নার হাতের চামড়া ও মাংস কাটে এবং ধারালো দাঁ দিয়ে হাড় কেটে খণ্ডিত অংশকে তিনটি ভাগে রাখে। একটি লাল রঙের কাপড়ের ব্যাগে মাথা, শরীরের মূল অংশকে একটি নীল রঙের পানির ড্রামে, কেটে ফেলা দুই পা এবং দুই হাতকে একটি বড় কাপড়ের ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখে। এলাকা থেকে ১৩০০ টাকায় একটি রিকশা ভাড়া করে প্রথমে আমতলী এলাকায় শরীরের মূল অংশ ফেলে দেন।

পরবর্তীতে মহাখালী এনা বাস কাউন্টারের সামনে দুই হাত-দুই পা ভর্তি ব্যাগ রেখে চলে আসে বাসায়। বাসায় এসে সেখান থেকে খণ্ডিত মাথার ব্যাগটি নিয়ে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পূর্বপ্রান্ত থেকে গুলশান লেকে ফেলে দেন। এরপর বাসায় এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকেন ফাতেমা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়