ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ১ জুন ২০২৩  

হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ

হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ

হজ শব্দের অর্থ কোনো পবিত্রস্থান দর্শনের সংকল্প করা। ইসলামী পরিভাষায় হজ অর্থ আল্লাহ রব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট স্থানগুলো এবং খানায়ে কাবা তাওয়াফ, ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত থাকা এবং অন্য কয়েকটি স্থানে আল্লাহ ও রসুলের নির্দেশিত অনুষ্ঠান পালন। হজ ইসলামের পঞ্চম রুকন বা স্তম্ভ। আল্লাহ রব্বুল আলামিন ইরশাদ করছেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরাহ পরিপূর্ণভাবে পালন কর।’ (সুরা বাকারা আয়াত ১৯৬) অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর প্রত্যেক মানুষের ওপর ফরজ এ ঘরের হজ করা, যে এ ঘর পর্যন্ত যাতায়াতের (দৈহিক ও আর্থিক) সামর্থ্য রাখে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে তবে আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ৯৭) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পাঁচটি বিষয়ের প্রতি ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে- এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল, নামাজ কায়েম, জাকাত আদায়, বায়তুল্লাহর হজ ও রমজানের রোজা রাখা।’ (বুখারি, মুসলিম)

হজ সম্পর্কে বিপুলসংখ্যক হাদিস রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নবী আমাদের উপস্থিতিতে বললেন, হে লোকেরা! আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। কাজেই তোমরা হজ কর। উপস্থিত জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! প্রতি বছরই কি হজ? তিনি নিরুত্তর রইলেন। অগত্যা ওই ব্যক্তি এ প্রশ্নটি পরপর তিনবার করলেন। তখন রসুলুল্লাহ বললেন, উত্তরে যদি আমি হ্যাঁ বলতাম, তাহলে তোমাদের ওপর প্রতি বছর হজ ফরজ হয়ে যেত, অথচ তা পালন করার সামর্থ্য তোমাদের থাকত না। এরপর তিনি বললেন, যতক্ষণ আমি তোমাদের ছেড়ে দিই, তোমরাও আমাকে ছেড়ে রেখ। কারণ, তোমাদের পূর্ববর্তী যারা ছিল তারা অতিরিক্ত প্রশ্ন করার ও নিজেদের নবীদের ব্যাপারে মতবিরোধের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। কাজেই যখন আমি তোমাদের কোনো কিছুর হুকুম দিই, তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পালন কর। আর যখন কোনো কাজ থেকে বারণ করি, তা থেকে বিরত থেক।’ (মুসলিম) করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর হজ পালন সীমিত করা হয়েছে। আমরা আল্লাহর দরবারে মিনতি জানাব, এ মুসিবত থেকে তিনি যেন আমাদের সবাইকে মাফ করেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হজ পালনের তৌফিক দান করুন। নারীরা সামর্থ্যবান হলে তাদের ওপরও হজ করা ফরজ। তবে হজ আদায়ের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষভাবে পালনীয় কিছু বিধান রয়েছে; যা তাদের হজ পালনে সুবিধা ও পবিত্রতা রক্ষায় অধিক সহায়ক। পবিত্র হজব্রত পালনে গমনেচ্ছু মা-বোনদের হজের কার্যাবলি সঠিকভাবে সম্পাদনের সুবিধার্থে এ- সংক্রান্ত কিছু বিধিবিধান পাঠকদের খেদমতে উপস্থাপন করছি :  প্রত্যেক নারীকে অবশ্যই মাহরাম পুরুষের সঙ্গে হজে যেতে হবে। মাহরাম বলা হয় এমন পুরুষকে যার সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ। যেমন- পিতা, পুত্র, স্বামী, আপন ভাই, আপন চাচা, আপন মামা ইত্যাদি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো নারী যেন স্বীয় মাহরাম ছাড়া সফর না করে। এরপর এক সাহাবি আরজ করলেন, হে আল্লাহর রসুল! আমি জিহাদে যাওয়ার জন্য সেনাদলে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি, আর আমার স্ত্রী হজে যেতে ইচ্ছা করেছে। এ কথা শুনে রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমিও তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজে যাও।’ (বুখারি) ইহরাম অবস্থায় সাধারণ ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে এবং মাথা ঢেকে রাখতে হবে। আকর্ষণীয় পোশাক পরিধান করা বা চেহারা ঢেকে রাখা যাবে না। এখানে চেহারা না ঢাকার দ্বারা উদ্দেশ্য এই নয় যে চেহারা সম্পূর্ণ খুলে রাখতে পারবে, বরং ইহরাম অবস্থায়ও পর্দার প্রতি সর্বোচ্চ খেয়াল রাখা জরুরি। তাই মাথার ওপর ক্যাপ বা এ- জাতীয় কিছু পরিধান করে তার ওপর নেকাব ঝুলিয়ে দেবে; যাতে নেকাবের কাপড় চেহারা স্পর্শ না করে। নারীরা পুরুষের মতো মাথা মুন্ডাবে না। বরং চুলের আগা থেকে এক কর পরিমাণ ছেঁটে ফেলবে। হজরত আলী (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) নারীদের মাথা মু-ন করতে নিষেধ করেছেন। (তিরমিজি)

সর্বশেষ
জনপ্রিয়