ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

১৫ লাখ টন গম রপ্তানির অনুরোধ পেলো ভারত, বড় ক্রেতা বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ১ জুন ২০২২  

সংগৃহীত

সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সৃষ্ট সংকট কাটাতে ভারত থেকে খাদ্যশস্য আমদানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিভিন্ন দেশ। এ অবস্থায় কিছুদিন আগে দক্ষিণ এশীয় দেশটি হঠাৎ গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করলে মহাবিপদে পড়ে ক্রেতারা। অবশ্য সরকারি অনুরোধের প্রেক্ষিতে কিছু দেশে গম রপ্তানির পথ খোলা রেখেছে নয়াদিল্লি। সেই সুযোগ নিয়ে সম্প্রতি ভারতের কাছে ১৫ লাখ টনের বেশি গম কেনার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাংলাদেশ। গত সোমবার (৩০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ভারত সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, অন্তত আধা ডজন দেশ ভারতের কাছ থেকে ১৫ লাখ টনের বেশি গম কিনতে চেয়েছে। তাদের এসব অনুরোধে কী করা যায়, আমরা তা দেখবো।

ভারতীয় সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, অরক্ষিতসহ গমের চাহিদা সম্পন্ন দেশগুলোকে সাহায্য করতে আগ্রহী ভারত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গম কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অনুরোধটি গেছে বাংলাদেশ থেকে, যারা ভারতীয় গমের নিয়মিত ক্রেতা।

একটি বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ভারতীয় শাখার প্রধান বলেন, বাংলাদেশের জন্য অন্য উৎসের তুলানায় ভারতীয় গম অন্তত ৩০ শতাংশ সাশ্রয়ী। তার ওপর ভারতীয় কার্গো সেদেশে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র এক সপ্তাহের মতো।

সম্প্রতি গম আমদানির জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু চড়া দামের কারণে পরে তা বাতিল করা হয়েছে।

রয়টার্সের খবর অনুসারে, চলতি অর্থবছরে মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ ভারত থেকে রেকর্ড ৪০ লাখ টন গম আমদানি করেছে। গত অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ১২ লাখ টন।

বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম গম আমদানিকারক মিসর ভারত থেকে গম কিনতে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করেছে। এ তালিকায় রয়েছে জ্যামাইকা এবং এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশও।

জানা গেছে, উগান্ডা-ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহের জন্য জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউিএফপি) কাছ থেকেও গম কেনার অনুরোধ পেয়েছে ভারত।

এর আগে, দেশীয় বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বলে গত ১৩ মে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে ভারত। তবে প্রতিবেশী ও খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে থাকা কিছু দেশকে এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। এর বাইরে, অন্যান্য দেশের সরকারের অনুরোধ সাপেক্ষেও গম রপ্তানির সুযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি।

ভারতের এ নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশে গমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন নিশ্চিত করেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ হচ্ছে না।

ভারতীয় হাইকমিশনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভারতে গম রপ্তানির ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ এরই মধ্যে চুক্তিবদ্ধ চালানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। এই নির্দেশাবলী ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও গম রপ্তানি আটকাবে না। পাশাপাশি, অন্য যেসব দেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ভারতীয় গম আমদানি করতে ইচ্ছুক, সেসব দেশের সরকারের অনুরোধ সাপেক্ষেও গম রপ্তানি চলবে।

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদক হলেও বৈশ্বিক রপ্তানিতে তাদের অংশ মাত্র এক শতাংশের মতো। পরিমাণ ও মূল্য উভয় দিক থেকে ভারতীয় গমের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাংলাদেশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের মোট গম রপ্তানির ৫৪ শতাংশই এসেছে বাংলাদেশে। ওই বছর ভারতীয় গমের শীর্ষ ১০ ক্রেতা ছিল বাংলাদেশ, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, শ্রীলঙ্কা, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, ওমান ও মালয়েশিয়া।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়