নামাজ কাজা করার বিধান, বার বার হলে করণীয়
নিউজ ডেস্ক
নামাজ কাজা করার বিধান, বার বার হলে করণীয়
নামাজ বা নামায (ফার্সি: نماز) বা সালাত বা সালাহ (আরবি: صلاة) ইসলাম ধর্মের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন। প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘...নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য’। (সূরা: নিসা, আয়াত: ১০৩)
ঈমান আনার পর একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো নামাজ পড়া। আর ঘরে-বাইরে, দেশে-বিদেশে, সাগরে-মহাকাশে যেখানে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, সুন্নত পদ্ধতিতে সময়মতো নামাজ পড়তেই হবে।
কাজের অজুহাতে নামাজ কাজা করা যায় না। মূলত কাজা করার বিধান রাখা হয়েছে হঠাৎ যেকোনো অসুবিধা বা কোনো দুর্ঘটনাজনিত অপারগতার কারণে। নিয়মিতভাবে এটাকে অভ্যাস করা অথবা কাজের অজুহাতে প্রতিদিনই একই ঘটনা ঘটানো শরিয়তে গ্রহণযোগ্য নয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য- অনেকে সামান্য অজুহাতেই নামাজ কাজা করে বসে। যেমন- অনেককে বলতে শোনা যায় যে কাপড় ভালো না কিংবা ওজু করার সুযোগ নেই অথবা নামাজের জায়গা নেই- ইত্যাদি ছোটখাটো বিষয়কে বড় অজুহাত বানিয়ে সময়মতো নামাজ পড়ে না। অথচ শরিয়তের নির্দেশনা হলো- আপনাকে জামা-কাপড় পবিত্র রাখতেই হবে, ওজু করার ব্যবস্থা যেকোনো মূল্যেই রাখতে হবে, পানি না থাকলে তায়াম্মুম করতে হবে। টয়লেটে না গিয়ে যেমন পারেন না, না খেয়ে যেমন পারেন না, একইভাবে নামাজকেও সেই পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। কারণ নামাজ আল্লাহর দেওয়া ফরজ বিধান। ওয়াক্ত থাকতে পড়ার বিধান। নিয়মিতভাবে কাজা করা বা ঘরে গিয়ে একসঙ্গে কয়েক ওয়াক্ত কাজা পড়ার সুযোগ ইসলামে নেই।
মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনে গাফিলতি কখনও নাজাতের কারণ হয় না। বরং ফরজ ইবাদতের প্রতি আগ্রহ ও চেষ্টার কারণেই বান্দা সঠিক পথের দিশা লাভ করে।
আল্লাহ তাআলা তার জন্য প্রত্যেকটি বিষয় সহজ করে দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন- وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا অর্থ: ‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য আমার হুকুম মানার জন্য চেষ্টা করবে, অবশ্যই আমি তাদের পথ প্রদর্শন করব’। (সূরা: আনকাবুত, আয়াত: ৬৯) আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা নিজেদের নামাজের হেফাজত করে তারাই জান্নাতে সম্মানের পাত্র হবে’। (সূরা: মাআরিজ, আয়াত: ৩৫)
আবার, অনেকে মনে করে যে জামাত ছুটে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যায়। এই ধারণা সঠিক নয়। শরয়ি ওজরে জামাত ছুটে গেলে নামাজ কাজা হবে না। কেবল জামাতে সালাত আদায়ের জন্য যে ২৭ গুণ অতিরিক্ত সওয়াব তা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। কারণ ‘জামাতে সালাত আদায় একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সওয়াবের’। (বুখারি: ৬৪৫; মুসলিম: ৬৪০)
অতএব, নামাজের ব্যাপারে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। যারা নামাজের ব্যাপারে সবসময় সচেতন তাদের জন্যই বড় পুরস্কার অপেক্ষা করছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলার কারণে এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন’। (সুনানে আবি দাউদ: ১৪২০)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে প্রত্যহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
- যে দোয়া পড়লে মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- যে দোয়া পড়বেন রোগীর সুস্থতার জন্য
- কুরআন-হাদিসের আলোকে জেনে নিন কুরবানির ইতিহাস
- রাসুল (সা.)-এর কবর খনন করেন যিনি
- সর্বোত্তম খাবার ও উপার্জন
- অহংকার পতনের মূল
- খারাপ স্বপ্ন দেখলে রাসুল (সা.) যে আমল করতে বলেছেন
- মু’আয বিন জাবাল (রা.)কে মহানবী (সা.)-এর ১০ উপদেশ
- যেসব ছোট আমলে বেশি নেকি
- নামাজ না পড়লে দুনিয়ার যেসব শাস্তি অনিবার্য