ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

কেয়ামত, জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২৪, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩  

কেয়ামত, জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা

কেয়ামত, জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা

পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা আল কারিয়াতে কেয়ামত, জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে।পবিত্র কোরআনুল কারিমের ৩০তম পারার ১০১ নম্বর সূরা হলো সূরা আল কারিয়া। এর আয়াত সংখ্যা ১১। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ।

সূরা আল কারিয়ার শুরুতে আল্লাহ তাআলা কেয়ামত দিবসের বিভীষিকার আলোচনা তুলে ধরেছেন। কেয়ামতের বিভীষিকার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেছেন, সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের মতো হয়ে যাবে এবং এদিক সেদিন ছুটাছুটি করবে। অর্থাৎ তখন মনে হবে মানুষ যেন উন্মত্ত কীটপতঙ্গে মতো ঝাঁপ দিচ্ছে ধ্বংসের আগুনে। অত্যধিক আতঙ্ক ও অস্থিরতার কারণে মানুষ তখন দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে আগুনে আত্মহুতিদান করা পতঙ্গের মতো হয়ে যাবে।

কেয়ামতের বর্ণনা করতে গিয়ে আরো বলা হয়েছে, তখন পাহাড় পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে এমনভাবে শূন্যে উড়তে থাকবে যে, দেখে মনে হবে আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে ধুনিত রঙ-বেরঙের পশম মতো।

কেয়ামতের বর্ণনার পর সেদিন মানুষের অবস্থা এবং পরিণতি কেমন হবে তা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেদিন যার আমলের পাল্লা ভারি হবে সে লাভ করবে সন্তোষজনক জীবন। আর যার পাল্লা হালকা হবে সে জাহান্নামের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তাকে উল্টোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

এখানে জাহান্নামের ক্ষেত্রে ‘হাওয়িয়াহ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। হাওয়িয়াহ’ শব্দটি জাহান্নামের একটি নাম। শব্দটি এসেছে ‘হাওয়া’ থেকে। এর অর্থ হচ্ছে উঁচু জায়গা থেকে নীচুতে পড়ে যাওয়া। আর যে গভীর গর্তে কোনো জিনিস পড়ে যায় তাকে হাওয়িয়া বলে।

জাহান্নামকে হাওয়িয়া বলার কারণ হচ্ছে এই যে, জাহান্নাম হবে অত্যন্ত গভীর এবং জাহান্নামবাসীদেরকে তার মধ্যে ওপর থেকে নিক্ষেপ করা হবে। আর এর আগুন হবে অত্যন্ত উত্তপ্ত ও লেলিহান। (ইবন কাসীর)

হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আদম সন্তান যে আগুন ব্যবহার করে সেটি জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ উত্তপ্ততা সম্পন্ন, সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটাই তো শাস্তির জন্যে যথেষ্ট, তিনি বললেন, জাহান্নামের আগুন তার থেকে উনসত্তর গুণ বেশি উত্তপ্ত’। (বুখারি, হাদিস, ৩২৬৫)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের এ আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ। তারপরও তাকে দুবার সমুদ্রের মাধ্যমে ঠাণ্ডা করা হয়েছে, নতুবা এর দ্বারা কেউই উপকৃত হতে পারত না’। (মুসনাদে আহমাদ: ২/২৪৪)

(তাফসিরে মাআরিফুর কোরআন, ৮/৮৪৯, তাফসিরে ইবনে কাসির, ১৮/২৮১, তাফসিরে মাযহারী, ১২/ ৫৭৩)

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

সূরা আল কারিয়া

الْقَارِعَةُ

مَا الْقَارِعَةُ

وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْقَارِعَةُ

يَوْمَ يَكُونُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوثِ

وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنفُوشِ

فَأَمَّا مَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ

فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَّاضِيَةٍ

وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ

فَأُمُّهُ هَاوِيَةٌ

وَمَا أَدْرَاكَ مَا هِيَهْ

نَارٌ حَامِيَةٌ

সূরা আল কারিয়ার অর্থ

(স্মরণ কর) সেই ঘটনা, যা (অন্তরাত্মা) কাঁপিয়ে দেবে। (অন্তরাত্মা) প্রকম্পিতকারী সে ঘটনা কী? তুমি কি জান (অন্তরাত্মা) প্রকম্পিতকারী সে ঘটনা কী? যে দিন সমস্ত মানুষ বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতো হয়ে যাবে। এবং পাহাড়সমূহ হবে ধূনিত রঙ্গিন পশমের মতো। তখন যার পাল্লা ভারী হবে। সে তো সন্তোষজনক জীবনে থাকবে। আর যার পাল্লা হালকা হবে। তার ঠিকানা হবে এক গভীর গর্ত। তুমি কি জান তা কী? এক উত্তপ্ত আগুন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়