রামপালে জুনের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন শুরু
নিউজ ডেস্ক
রামপালে জুনের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন শুরু
খুলনার রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তার খুলনা বিভাগ সফরের দ্বিতীয় দিনে গতকাল শনিবার সকালে তিনি এটি পরিদর্শন করেন। এ সময়ে তিনি বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে। এটি চালু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কয়লা সংকটে সাময়িক উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রথম ইউনিটও আগামী সপ্তাহে চালু হবে।
ভারত সরকারের কনসেশনাল ফাইন্যান্সিং স্কিমের অর্থায়নে প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে এই প্লান্ট নির্মাণ করা হচ্ছে, যার সিংহভাগই ভারতের এক্সিম ব্যাংক প্রদান করছে। এই পাওয়ার প্লান্টে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার হয়ে থাকে এবং এটি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত।
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্লান্টটির প্রথম ইউনিট উদ্বোধন করেন। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর প্লান্টটি থেকে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।
পরিদর্শনকালে প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, কয়লা সংকট একটা অপারেশনাল ইস্যু। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি, এই সংকট কেটে যাবে। আগামী সপ্তাহেই সাময়িক বন্ধ হওয়া প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। আর সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আগামী জুন মাসের মধ্যে প্লান্টের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে। তখন প্লান্টটির পুরো ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের উৎপাদন ক্ষমতার পুরোটাই ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদ একরাম উল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় রামপাল কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। ডলার রিলিজ করতে কিছুটা সময় লাগার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। তবে সমস্যা সমাধান হওয়ায় নতুন করে কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ সেখান থেকে রওনা দিয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কয়লাবাহী জাহাজ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসে পৌঁছবে।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে নিয়মিত কয়লা আসবে। ফলে জুন মাস থেকে আবারও কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ ছাড়া দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে জোরেশোরে কাজ চলছে। সবমিলিয়ে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কোনো সমস্যা হবে না।
২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেড এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে এবছরে ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইনে স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায় এবং জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। পরে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন।
স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট থেকে জানান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট চালুর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সব ধরনের পরিবেশগত বিষয় বিবেচনা করে প্ল্যান্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। যার কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
এর আগে সকাল ১০টায় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসে বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন। এ সময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা হাই কমিশনারকে কেন্দ্রের বিভিন্ন বিষয় অবহিত করেন। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
- PM opens Southeast Asia`s largest fertiliser factory in Narsingdi
- Tk 12,500 announced as minimum wage for RMG workers
- PM vows to make leprosy free Bangladesh by 2030
- Bangladesh joins `50-in-5` campaign as first-mover country to implement DPI
- রাজধানীতে আজ চালু হলো ১০টি ইউটার্ন
- কৃষিপণ্য কেনাবেচার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ফুড ফর ন্যাশন’ উদ্বোধন করে
- বঙ্গবন্ধুর সাথে ছোট বেলার স্মরণীয় মধুর স্মৃতি
- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাঃ রাষ্ট্র বনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
- ২৫তম পর্ব: কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই
- প্রতিমন্ত্রী জানালেন বাড়তি বিদ্যুত বিল এলে যা করবেন