ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আমেরিকায় বাংলাদেশিদের বিনা খরচে মাস্টার্স করার সুযোগ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২৩, ১৬ মার্চ ২০২১  

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ফুলব্রাইট ফেলোশিপের ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকা (যুক্তরাষ্ট্র)। বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২২-২০২৩ সালের ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামের আবেদন গ্রহণ করা শুরু করেছে দেশটি। 

আগামী ১৫ মে, ২০২১ তারিখ পর্যন্ত করা যাবে আবেদন। ওই দিন বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আবেদন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের থেকে গ্রহণ করা হবে আবেদন। অনলাইনে পূরণের আবেদন ফরম পাওয়া যাবে https://apply.iie.org/ffsp2022 এই সাইটে। 

ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় স্নাতক ডিগ্রিধারী (গ্র্যাজুয়েট) শিক্ষার্থী ও তরুণ পেশাজীবীরা সম্পূর্ণ বিনা খরচে (পূর্ণ অর্থায়নে) যুক্তরাষ্ট্রে তাদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি (মাস্টার্স) গ্রহণের সুযোগ পাবেন। 

মূলত এই প্রোগ্রামটি যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে ইচ্ছুক উচ্চাকাঙ্ক্ষী তরুণ পেশাজীবীদের জন্য। এই কার্যক্রমে অংশ নেয়ার জন্য অগ্রাধিকার পাবে দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বর্তমান কনিষ্ঠ অনুষদ সদস্য এবং সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন এবং এনজিওতে কর্মরত কনিষ্ঠ থেকে মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তারা। শিক্ষার সব শাখার আগ্রহী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন এ প্রোগ্রামে। 

মার্কিন দূতাবাস জানায়, বিশেষভাবে শিক্ষার কয়েকটি শাখার ওপর জোর দিতে চান তারা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পাঠ্যক্রম উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও ভৌতবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, মানবিক শাখা, ব্যবসায়, অর্থনীতি, জননীতি, পরিবেশগত বিজ্ঞান, নগর–পরিকল্পনা, চারুকলা, মনোবিজ্ঞান এবং নিরাপত্তাবিষয়ক অধ্যয়ন। 

যারা আবেদন করতে পারবেন: 

বাংলাদেশের স্বীকৃত সরকারি কিংবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বপূর্ণ ফলসহ ন্যূনতম চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে আবেদনকারীর। এক্ষেত্রে পূর্বে কোনো আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেয়নি কিংবা বর্তমানে আমেরিকায় কোনো শিক্ষা কার্যক্রমে ভর্তি নয় এমন শিক্ষার্থী হতে হবে৷ বাংলাদেশী কোনো আবেদনকারীকে অন্য কোনো দেশ থেকে পূর্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হওয়া যাবে না। তবে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন, তাঁরা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

এছাড়াও, আবেদন ইচ্ছুক যে বিষয়ে পড়তে যেতে ইচ্ছুক, সেই বিষয়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক/সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম দুই বছরের পূর্ণকালীন কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ইংরেজিতে কথা বলায় সাবলীল ও পারদর্শী হতে হবে। ইন্টারনেটভিত্তিক (আইবিটি) টোয়েফলে (TOEFL) ন্যূনতম ৯০ কিংবা আইইএলটিএস (IELTS)-এ ন্যূনতম ৭ (সাত) স্কোর থাকতে হবে আবেদনকারীর। মেডিক্যালি ফিট হতে হবে। আবেদনের সময় বাংলাদেশে বসবাসকারীকে বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। ডিগ্রি শেষ করার আগেই বাংলাদেশে (বাড়িতে) ফিরে এলে ফিরতি বিমানের টিকিটের মূল্য ফেরত দিতে সম্মত থাকতে হবে। 

প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য বাধ্যতামূলকভাবে জিআরই (GRE) কিংবা জিম্যাট (GMAT) স্কোর থাকতে হবে। আবেদন পত্র জমা দেয়ার সময় কারও জিআরই বা জিম্যাটের স্কোর না থাকলে তাদেরকে শুধু প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করে প্রার্থীদের জন্য পরীক্ষার আয়োজন করতে পারে আমেরিকান সেন্টার। 

যা যা প্রয়োজন হবে আবেদন করতে: 

আবেদনকারী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপরবর্তী সময়ে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও সনদ সংগ্রহ করবেন। 

তিনজন সুপারিশকারী পৃথকভাবে অনলাইন আবেদন পোর্টালে সরাসরি তিনটি সুপারিশপত্র (Letters of Reference) আপলোড/ উপস্থাপন করবেন (সম্ভাব্য প্রার্থীরা অবশ্যই অনলাইন আবেদন সাইটে ‘Recommender Registration’ বাটনের মাধ্যমে নিজ নিজ সুপারিশকারীদের নিবন্ধন করবেন)। 

তাছাড়া, অ্যাকাডেমিক রেকর্ডবিষয়ক সকল তথ্যাদির পূরণকৃত ফরম (অনলাইন আবেদন সাইটে পাওয়া যাবে)। টোয়েফল (TOEFL)/আইইএলটিএসের (IELTS) বৈধ স্কোর (যে স্কোর মেয়াদোত্তীর্ণ হয়নি)। 

প্রার্থীদের অবশ্যই আবেদনের সকল নির্দেশনা ও আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সকল নির্দেশিকা অনুসরণ করা লাগবে। কোনো আবেদনকারীর যদি আবেদন করার যোগ্যতা পূরণ না হয় তাহলে সেই আবেদনপত্র বাছাই কমিটিতে পাঠানো হবে না। 

সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের কনফার্ম করার জন্য সাক্ষাৎকারে ডাকা হবে এবং সাক্ষাৎকার হবে ইংরেজিতে। 

ফলাফল:

এ বছরের ১৫ মে শেষ হবে অনলাইন আবেদন গ্রহণ। আগের যাঁরা আবেদন করেছিলেন কিন্তু উত্তীর্ণ হননি, এমন প্রার্থীরাও এ বছর চাইলে আবার আবেদন করতে পারবেন। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কঠোর বাছাইপ্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। কেননা এটি একটি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা যেখানে বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের নাগরিকেরা এই ফেলোশিপের জন্য আবেদন করে থাকেন। বাছাইয়ের পর চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রার্থীদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ২০২১ সালের জুলাই মাসের শেষ নাগাদ জানানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রে এই কার্যক্রমটি শুরু হবে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। 

নির্বাচিত প্রার্থীরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি গ্রহণের পরপর অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে। দেশে ফিরে এসে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স সেকশনে তাঁদের দেশে ফিরে আসার বিষয়টি অবগত করতে হবে এবং একটি ব্রিফিং সভায় যোগ দিতে হবে। 

ফুলব্রাইট কর্মসূচি সম্পর্কে https://bd.usembassy.gov/education-culture/student-exchange-programs/ এই ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে৷ 

সমস্যায় যোগাযোগ:

ফুলব্রাইট বৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হলে sultanar1@state.gov এই ই–মেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারবেন আবেদনকারীরা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়